আগামী সপ্তাহেই বেরোবিতে আসছেন নতুন উপাচার্য

এইচ. এম নূর আলম, বেরোবি প্রতিনিধি : চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নতুন উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন।বুধবার এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের পরিচালক ও ট্রেজারার না থাকায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন না তুলতে পারার আশঙকার কথা বললে,তিনি এসে এসব সমস্যার সমাধান করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ দিকে শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারীর এক সপ্তাহ হতে চললেও ক্যাম্পাসে আসতে পারেন নি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।এতে বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।নিয়োগের পরও উপাচার্যের অনুপস্থিতি সকলের মাঝে একটি আশংকার সৃষ্টি করেছে।উপাচার্য থেকেও অভিভাবকহীনতায় রয়েছে পুরো ক্যাম্পাস।আশার মধ্যেও হতাশায় ভুগছে অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারি।তবে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা এবং ‘চিকনগুনিয়া’ রোগে আক্রান্ত থাকায় নতুন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারছেন না বলে জানা গেছে।

উপাচার্য নিয়োগের পাশাপাশি উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার নিয়োগের দাবি থাকলেও তা কবে নিয়োগ হবে কিংবা নতুন উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে উদ্যোগ নিবেন কি না সেটা হয়তো কিছুদিন পর বোঝা যাবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমন উন্নয়ন হবে কিংবা সাবেক উপাচার্যের ফেলে যাওয়া কাজের কতটুকু অগ্রগতি হবে তা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন অনেকেই।

ইতোমধ্যে একমাস কেটে গেছে উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকান্ডের।এখনেও কার্যকরভাবে চলছে না প্রশাসনিক ভবনের অনেক কাজই।অনেকটাই অলস সময় পার করেছে অনেক দপ্তর।

উপাচার্য নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।তবে জনমনে প্রশান উঠেছে আদৌ কি তিনি ক্যাম্পাসে সব সময় থাকবেন??জানা গেছে, তিনি দেশে-বিদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।এ ছাড়াও তিনি নিয়মিত টকশো প্লেয়ারও।সাবেক উপাচার্য ড. এক এম নূর-উন-নবী’র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিলো তিনি তাঁর সময়ের তিন বছরে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন ৪৯৫ দিন।আর ইউজিসি’র তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে দুই বছরে ১৬৫ দিন ক্যাম্পাসে থাকার কথা জানিয়েছে।সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় কনসালটেন্সিরও অভিযোগ উঠেছিলো।তিনি রাষ্ট্রের বা দেশের তেমন কোনো পদে আসীন না থাকলেও দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন এবং সপ্তাহে পাঁচদিনই থাকতেন ঢাকায় আর বলতেন কাজে আছি।তাহলে এই উপাচার্য বেরোবিতে সব সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন তো?? তবে ঢাকাপ্রীতি করবেন না বলে সকলের প্রত্যাশা এই উপাচার্যের প্রতি।

এদিকে নতুন উপাচার্যের আগমনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন সকলেই।কবে আসছেন নতুন উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।বুধবার বেলা ১১ টায় এক মুঠোফোনে তিনি জানান, তিনি চিকনগুনিয়া(ভাইরাসঘটিত জ্বর)রোগে আক্রান্ত,তাঁর এখন বিশ্রাম প্রয়োজন।তিনি আশ্বাস দিয়ে জানান,দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব থেকে রিলিজের বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে।আগামী সপ্তাহে তিনি বেরোবিতে আসবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যদের প্রত্যাশা ছিলো হয়তো এবার ঢাকার বাইরের এবং রংপুরের কাছাকাছি একজন উপাচার্য আসবেন যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখভাল ভালোভাবে করতে পারবেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা মনে করেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজন উপাচার্য দরকার যিনি ঢাকামুখী হবেন না এবং যার ঢাকায় তেমন কাজ থাকবেন না।কারন, এখানে একদিন উপাচার্য অনুপস্থিত থাকা মানে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়া।বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষিত-অঘোষিতভাবে ১৫-২০ টি পদ শূন্য থাকায় নাজেহাল অবস্থার মধ্যে রয়েছে বর্তমান বেরোবি।

তবে সকলের প্রত্যাশা, উপাচার্য দ্রুতই আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট মুক্ত করবেন এবং চলমান পরিস্থিতি থেকে উন্নতি করবেন।