আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই : মির্জা ফখরুল

গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাইলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আন্দোলনের বিকল্প নেই, ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, ফয়সালা রাজপথেই হবে।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

৩০ ডিসেম্বরকে ‘ভোটাধিকার হরণের কালো দিবস’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিশেষ দিনটি ছিল গতকাল ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষ। আমরা এটাকে কেন মনে করছি, কারণ এ দিনে আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি ভোটের দিন ভোট চুরি হয়, ডাকাতি হয়, ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়ে যায়। কিন্তু এভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আগের রাতে ভোট চুরি করে ফলাফল নিয়ে যাওয়া হয়, এটা আমরা প্রথম দেখেছি ২০১৮ সালে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে এ অবস্থায় নিয়ে আসা হঠাৎ করে হয়নি। যখন খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে সংবিধানে সংযোজন করলেন, যখন দেখা গেল বাংলাদেশ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন থেকেই এ ষড়যন্ত্র শুরু হলো। এখানে কেন ভালো নির্বাচন হবে? কেন ভালো সিস্টেম গড়ে উঠবে? কেন বিরোধীদল ও সরকারি দল পারস্পরিক সমঝোতার মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। নিলেই তো বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলতার মধ্যে দিয়ে আরও বেশি করে সমৃদ্ধ হবে। তখন থেকেই এই কাগজগুলো শুরু হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক-এগারো সরকারের সময় ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের যে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ ছিল। সেটাকে শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে আঁতাত করে মাইনাস ওয়ানে নিয়ে এসেছিলেন। বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ অর্থাৎ এখানে যেন রাজনীতি না থাকে। তারই প্রক্রিয়া এখন পর্যন্ত দেখছি। আমলারা আকাশে উঠে গেছে। রাজনীতিকে পুরোপুরি সরিয়ে সামরিক আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। এটা আমাদের এক নম্বর কথা। কেন চাই, বাংলাদেশে জীবিতদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন একমাত্র নেত্রী, যিনি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নয় বছর রাজপথে সংগ্রাম করেছেন। উড়ে এসে জুড়ে বসে মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হননি। গণতন্ত্রের প্রতি তার আস্থা এত বেশি যে তিনি অত্যন্ত দুরূহ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছেন, চিকিৎসকরা বলছেন, তাকে বাইরে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। কিন্তু তিনি মাথা নত করছেন না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, নিতাই রায় চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।