আবগারি শুল্ক কমিয়ে অর্থবিল পাস

ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে আবগারি শুল্ক কমানো ছাড়াও নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/মূসক) আইন কার্যকর হচ্ছে না। বর্তমানে প্রযোজ্য আইনে ভ্যাট আদায় করা হবে। এছাড়া মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ আগামী দুই বছরের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধের পর অর্থমন্ত্রী তার সমাপনি বাজেট আলোচনায় এ ঘোষণার পর রাতে অর্থবিল ২০১৭ পাস হয়।

বিল পাসের ফলে ব্যাংকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত রাখলে কোনো শুল্ক দিতে হবে না। এক লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকার জন্য দিতে হবে ১৫০ টাকা। ৫- ১০ লাখ পর্যন্ত ৫০০ এবং ১০ থেকে ১ কোটি পর্যন্ত দিতে হবে ২৫০০ টাকা। ১ কোটি থেকে ৫ কোটি পর্যন্ত ১২ হাজার ও ৫ কোটির উর্ধ্বের জন্য দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা।

এদিকে সমাপনি বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাজেট উপস্থাপনের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সব দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় দু-চারটি শুল্ক বা কর হারে বৃদ্ধির প্রস্তাবাবলীর ওপর। ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবের উপর শুল্ক বৃদ্ধি ছিল একটি বিতর্কের বিষয়। অনেক সংসদ সদস্য এবং গণমাধ্যম ভুলেই গেছিলেন যে, এ শুল্কটি ২০০২ সাল থেকে দেয়া হচ্ছে। কেউ কেউ বলেছেন, এ বাজেট একটি শ্রেষ্ঠ তামাশা।

তিনি বলেন, সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। সরকার দেশের বৃহত্তম কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিক। এ ব্যাংকগুলোর কোনো কোনোটিতে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে এবং সে সব বিষয়ে মামলা মোকদ্দমা হয়েছে। অনেক শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়েছে এবং বিচারাধীন আছে, যা এর আগে কখনো হয়নি। দায়ী ব্যক্তিদের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো সরকারের বিভিন্ন আদেশ অনুশাসনের ভিত্তিতে জনস্বার্থে বিনামূল্যে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সেবা দিয়ে থাকে। দেশের জনগণের সুবিধার্থে বাণিজ্যকভাবে অলাভজনক স্থানে শাখা বিস্তারের মাধ্যমে জনগণের সেবা দেয়। ফলে অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মত এ ব্যাংকগুলো শুধুমাত্র মুনাফার জন্য কাজ করে না। এ ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে তাই কিছুটা ভিন্নতা আছে। ব্যাংকগুলোর ধারাবাহিকতা ও চালু রাখার স্বার্থে অর্থায়নের প্রয়োজন হয়। ব্যাংকগুলোর নির্ধারিত মূলধন ক্রাইসিসের কারণে আন্তর্জাতিক লেনদেনে প্রকট সমস্যা হচ্ছিল। কোনো ব্যাংক মূলধনের অভাবে বন্ধ হলে আমানতকারীরা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এ বিবেচনায় জনস্বার্থেই মূলধন পূর্ণভরণ করা হয়েছে।

হাওর এলাকায় বিশেষ কোন বরাদ্দ নেই উল্লেখ করে কোনো কোনো সংসদ এ খাতে বিশেষ বরাদ্দের দাবী জানিয়েছেন। আমি এখানে উল্লেখ করতে চাই যে, সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে চর, হাওর ও পশ্চাদপদ এলাকার স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।