আমরা এখন শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবছি : ওয়ার্নার

দেনা-পাওনা নিয়ে বোর্ডের সাথে সমস্যা সমাধানের পর এবার কেবলমাত্র খেলাতেই নজর দিতে চান অস্ট্রেলিয়া দলের ভাইস ক্যাপ্টেন ডেভিড ওয়ার্নার। তিনি বলেন, যেভাবেই হোক বোর্ডের (অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড) সাথে সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন কেবলমাত্র মাঠে ভাল খেলে দলকে সাহায্য করার দিকে নজর দিতে চান।

জুন মাসে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অনেক আলোচনা-সমালোচনা শেষে গত সপ্তাহে বোর্ড এবং খেলোয়াড়রা নতুন চুক্তিতে সম্মত হয়। বিষয়টি ঠিকভাবে দেখভাল করা হয়নি বলে বিভিন্ন সময়ে সামাজিক মাধ্যমে খেলোয়াড়দের পক্ষে শক্ত ভুমিকা পালন করেছেন ডান-হাতি আক্রমণাত্মক এ ব্যাটসম্যান।

তবে যেভাবেই হোক সমস্যার সমাধানে পৌঁছা গেছে এখন ওয়ার্নার ও দলের খেলোয়াড়রা মাঠের খেলা এবং জন সমর্থন ফিরিয়ে আনতে মনোনিবেশ করতে পারবেন।

বেতন-ভাতাদি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া নিয়ে বোর্ড ও খেলোয়াড়দের সমালোচনা করেছেন দেশটির জনগণ। সুতরাং জনগণের পূর্ণ সমর্থন ফিরে পেতে অবশ্যই খেলোয়াড়দের এখন নৈপুণ্য দেখাতে হবে।

এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফর করবে অস্ট্রেলিয়া দল। বাংলাদেশ সফর শেষ করেই সরাসরি পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ভারত সফরে যাবে স্টিভ স্মিথের দলটি। এরপর রয়েছে বছরের শেষ দিকে নিজ মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজ।

কিভাবে খেলোয়াড়রা ভক্তদের সমর্থন ফিরিয়ে আনবে জানতে চাইলে নাইন নেটওয়ার্ক স্পোর্টসের সানডে প্রোগ্রামকে ওয়ার্নার বলেন, ‘ভাল ক্রিকেট খেলে।’

‘এই মুহূর্তে আমাদের ভাবনায় বাংলাদেশ সফর, এরপর ভারতে ওয়ানডে সিরিজ এবং এরপর অবশ্যই আমাদের সামনে আছে ‘বড়’ এ্যাশেজ সিরিজ।

‘গণমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, আমরা সেটা অনুভব করছি। আমরা এখন কেবল মাঠে গিয়ে খেলায় মনোনিবেশ করতে পারি।’

এদিকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজকে সামনে রেখে কঠোর অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দল। নানা কৌশল আঁটছেন হেড কোচ হাথুরুসিংহে।
সিরিজ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়াকে দুই টেস্ট ম্যাচেই হারাতে চাই।’

এর স্বপক্ষে তার যুক্তিও রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতি। ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংই বলে দেয় বাংলাদেশের উন্নতির কথা। টেস্টেও এখন অনেক পরিণত টিম বাংলাদেশ। বিশেষ করে হোমে।

হাতুরাসিংহে বলেন, ‘নিজ মাটিতে প্রতিপক্ষ যে দল হোক না কেন, তাদের হারানোর যথেষ্ট শক্তি-সামর্থ আমাদের রয়েছে। আমরা জানি প্রতিপক্ষকে কিভাবে আয়ত্বে রাখা যাবে।’

এটা সত্যি কথা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেই জেতার সুযোগ ছিল। একটিতে তো জিতেছে। আরেকটিতেও জেতার মতো অবস্থানে থেকে হারতে হয়েছে। ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটে কম শক্তিশালী নয়। ফলে তাদের বিপক্ষে ওই পারফরম্যান্স মানেই অসিদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে জয়ের আশা করাই যায়।

কারণ হোমে বাংলাদেশের স্পিনাররা যেমন কার্যকরী। তেমনি ভালো ব্যাটিংও করে অভ্যস্ত মুশফিক-সাকিব ও তামিমরা। হাতুরাসিংহের মতে এর চেয়ে বরং কঠিন সফর হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়।

তিনি বলেন, এ সিরিজটার কিছু দিন পরই দক্ষিণ আফ্রিকার সফর। ফলে সেখানকার কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিয়ে ভালো খেলা আরো কঠিন। আসলে সেখানে গিয়ে কোনো দলের পক্ষেই ভালো করা সম্ভবপর না। সেখানকার আবহাওয়া, উইকেটের সাথে অ্যাডজাস্ট করা জরুরি। সেটা যারা দ্রুত আয়ত্বে নিতে পারেন, তারাই ভালো করতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘ওই সিরিজের জন্যও আমাদের প্রস্তুতি আছে। শারীরিক ও মানসিক সবদিক থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যে প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি রয়েছে- সেটার গুরুত্ব অনেক। সে ম্যাচের মাধ্যমে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। তবে আমার মনে হয়, আমাদের মূল টার্গেট ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ। বিশেষ করে আমার কাছে। কারণ ওই আসরে ভালো খেলা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণও।’ এ জন্য প্রস্তুতি ক্যাম্পে বেশি ক্রিকেটার রাখার যৌক্তিকতার কথা বলেন।

তিনি জানান,‘ ক্যাম্পে বেশি ক্রিকেটার রাখার যুক্তি এখানেই। যাতে এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করে খেলোয়াড়রা তাদের পারফরম্যান্সের প্রমাণ দিয়ে দলভুক্ত হতে পারেন।’