আল আকসায় নামাযের কাতারে দাঁড়িয়ে বাইবেল পড়লেন এক খ্রিস্টান

ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের কাছে পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদ। ইহুদিদের কাছে তা টেম্পল মাউন্ট, মুসলমানদের কাছে হারাম আল শরীফ। খ্রিস্টানরাও এ স্থানটিকে নিজেদের পবিত্র স্থান বলে দাবি করে। ২৫ তারিখ এক খ্রিস্টান যুবক মুসলমাদের সাথে সেখানে প্রার্থনা করতে গেলেন। তবে তিনি নামায পড়েননি। নামাযের কাতারে দাঁড়িয়ে তিনি পাঠ করছিলেন বাইবেল।

তার অন্য বন্ধুরা যখন আল্লাহ আকবার বলে তাকবির বাঁধছিল, তিনি শ্রদ্ধাভরে চুপ করে দাঁড়িয়েছিলেন। অন্যরা সেজদায় গেলেও তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাতের মধ্যে বাইবেল নিয়ে তিনি বিড়বিড় করে পাঠ করছিলেন।

পূর্ব জেরুজামেলে অবস্থানরত হাজার হাজার মুসলমানদের মধ্যে তিনি একমাত্র খ্রিস্টান। তার নাম নাইদাল আবুদ। ২৪ বছর বয়সী নাইদাল আবুদ ছোটবেলা থেকেই ভেবে আসছেন একদিন তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে প্রার্থনা করতে যাবেন। কিন্তু, কোনোদিন তা করা হয়ে উঠেনি।

সম্প্রতি মসজিদটির প্রবেশ মুখে দুই ইসরায়েলি নিরাপত্তাকর্মী নিহত হওয়ার পর ইসরাইলি নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে তিন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়। এই নিয়ে আবার উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ইসরায়েল ও ফিলস্তিনের মধ্যে। মসজিদটি দুদিন বন্ধ রাখা হয়। পরে খুলে দিলেও মেটাল ডিটেক্টরসহ বসানো হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পরে ফিলস্তিনিদের প্রবল প্রতিবাদের মুখে ইলেকট্রিক গেট সরিয়ে নেয়া হয়। ইরায়েল-ফিলিস্তিনির এ দ্ব›দ্ব-সংঘাত নিয়ে বর্তমানে সারাপৃথিবীই চিন্তিত।

এরমধ্যে সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজের ছেলে আবদুল আজিজ বিন ফাহাদ ঘোষণা দিয়েছেন, আল আকসা মসজিদ উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনে তারা যুদ্ধ ঘোষণা করবেন। হয়তো আরো এক ক্রুসেডেরই আলামত। এই পরিস্থিতির মধ্যে নাইদাল আবুদ ঘোষণা করলেন অপূর্ব এক মানবতার বাণী।

সিএনএনকে নাইদাল আবুদ বললেন, আমি হিংসার বিরুদ্ধে ভালোবাসা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। প্রার্থনা হচ্ছে মানুষের সর্বোচ্চ ভালোবাসার প্রকাশ। আর আমরা তা একসাথে দাঁড়িয়েই করতে পারি। আমি আমার মুসলমান বন্ধুদের জিজ্ঞেস করেছি, আমি কি তোমাদের সঙ্গে দাঁড়াতে পারি। তারা আমাকে অনুমতি দিয়েছে। এটা ছিল আমার মুসলমান বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতির প্রকাশ।’-সিএনএন