আল আকসা মসজিদের জন্য প্রাণ দিতে যাচ্ছি’

‘এখানে আমার শেষ ইচ্ছার কথা লিখছি, এসব আমার জীবনের শেষ কথা। আমি আল-আকসার জন্য নিজের প্রাণ দিতে যাচ্ছি। ‘ সোশাল মিডিয়ায় ফেসবুকে এমন এক মর্মস্পর্শী পোস্ট দিয়ে ইসরায়েলি সেটলারদের ওপর ছুরি হামলা চালিয়েছেন ওমর আল আবেদ নামের ১৯ বছরের এক ফিলিস্তিনি তরুণ।

গত শুক্রবার ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ৯০ মিনিটের মাথায় ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের হালামিসহে ছুরি হামলা চালান ওই তরুণ। এতে তিন ইসরায়েলি নিহত হন। এদিকে হামলার পরপরই ওমরকে ধরে ফেলে ইসরায়েলি সেনারা। এরপর তাকে গুলিও করা হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ করেছে। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এতে তিন ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত এবং তিন শতাধিক আহত হন। এ ছাড়া আটক হন অন্তত ২৭ জন।

শনিবার সকালে ইসরায়েলি সৈন্যরা পশ্চিম তীরের কোবর গ্রামে ওমরের পরিবারের খোঁজে অভিযান চালায় এবং তার এক ভাইকে আটক করে। তবে হামলার ঘটনায় ওমর ও তার পরিবার বিপদে পড়লেও ফিলিস্তিনিদের কাছে রীতিমতো নায়কে পরিণত হয়েছেন দুঃসাহসী তরুণটি। ফেসবুকে দেওয়া পোস্ট নিয়ে তুমুল আলোচনাও শুরু হয়েছে। আরবি ভাষায় লেখা ওমরের পোস্টটি ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেজ।

ওমর লিখেছেন, আমি বয়সে তরুণ, এখনও আমার বয়স ২০ বছর হয়নি, আমার অনেক স্বপ্ন ও সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ কেমন জীবন, যখন তারা (ইসরায়েলিরা) কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের নারী ও তরুণদের হত্যা করছে। তারা আল-আকসা মসজিদকে অপবিত্র করছে আর আমরা ঘুমিয়ে থাকছি, এটি খুবই লজ্জার ব্যাপার যে আমরা অলস বসে আছি।

যেসব ফিলিস্তিনির কাছে অস্ত্র আছে তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে তরুণটি লেখেন, আপনারা এসব অস্ত্র শুধু বিয়ের অনুষ্ঠান আর উৎসবের সময় বের করেন, আপনারা কি নিজের জন্য লজ্জিত বোধ করেন না? কেন আপনারা আল্লাহর নামের যুদ্ধের ঘোষণা দেন না। তারা আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে আর আপনাদের অস্ত্রের কোনো নড়াচড়া নাই।

এদিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংস্থা হামাস ওমর আল আবেদের হামলাকে সমর্থন করেছে। সংগঠনটির মুখপাত্র হুসাম বাদরান বলেন, ‘আল-আকসা মসজিদের সমর্থনে আমরা দখলদারির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই চালিয়ে যাব। ‘

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, হামলাকারী ওমরকে তারা হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মনে করছে। তবে এখনও তাকে হামাসের সক্রিয় সদস্য বলে বিবেচনা করেনি তারা।