ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গোপন বৈঠক!

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গোপনে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। নেতানিয়াহু যে হোটেলটিতে ছিলেন, সেখানেই ২০১২ সালের সেপ্টেম্বেরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশ্চিমা দুই কূটনীতিকের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই দুই কূটনীতিক হারেৎজকে জানান, বৈঠকে ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে একমত হন নেতানিয়াহু ও বিন জায়েদ। তবে ইউএইর পররাষ্টমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে জানান, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে পারবে না।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠক চলাকালে ২০১২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর ঠিক একদিন আগেই জাতিসংঘে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। সেই বক্তব্যে ইরানের সামনে ‘সর্বোচ্চ সীমা’ (রেড লাইন) দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।

২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠক হয়নি বললেই চলে।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সৌদি আরব, ইউএই ও বাহরাইনের মতো দেশগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ইউএইর দুবাইয়ে ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের সামরিক শাখার জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মাহমুদ আল-মাবুহকে হত্যার পর সেটা আরো কঠিন হয়ে পড়ে।

ইউএইর পুলিশের ভাষ্য, মাবুহকে হত্যার পেছনে হাত ছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের। আর এর পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের চরম অবনতি হয় ইসরায়েলের। কিন্তু এর পরও মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আমিরাতের নেতাদের কাছে বিভিন্ন বার্তা পাঠিয়েছেন নেতানিয়াহু। এর পর বহু সময়ক্ষেপণের পর বৈঠকে রাজি হন বিন জায়েদ।

পশ্চিমা দুই কূটনীতিক জানান, সেই বৈঠকে বিন জায়েদের সঙ্গে ছিলেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইউএইর রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল ওতায়বা। আর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ছিলেন দেশটির তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াকুব অ্যামিদ্রর ও তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জোহানন লকার।