ঈদে চিড়িয়াখানায় বাড়তি আয়োজন

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানাকে। প্রাণীকূলের খাঁচা নতুন করে সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, বিনোদনে ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমসহ দর্শনাথীদের বাড়তি সুবিধা দিতে সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

এবারের ঈদে পাঁচ লাখ দর্শনার্থী আগমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

রাত পোহালেই কাল (সোমবার) পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের দিন শিশু-বড় সব বয়সের মানুষ ঘুরে বেড়াতে পচ্ছন্দ করেন। ঈদ উদযাপনে রাজধানীতে রয়ে যাওয়া মানুষের কাছে চিড়িয়াখানা একটি প্রধান বিনোদনের কেন্দ্র। এদিন চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন বয়সের প্রায় এক লাখ দর্শনার্থীর পদচারণা হয়।

দর্শনাথীদের ভোগান্তিবিহীন আনন্দ দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বারের চাইতে এবার কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ঈদে উপচে পড়া দর্শনাথীদের সকল সুবিধা নিশ্চিত করতে চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে ৯টি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তারা আগত দর্শনাথীদের সুবিধা দিতে সকাল ৮ থেকে সন্ধ্যা ৭ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

জানা গেছে, জাতীয় চিড়িয়াখানাকে আগের চাইতে এবারের ঈদে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। পুরো সীমানা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। নতুন করে দুইটি হরিণের খাচা এবং কুমির ও পাখিসহ বেশ কয়েকটি ভাঙ্গা খাচা ও সেড নতুন করে সংস্কার ও স্থাপন করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানান, এদিন উপচে পড়া মানুষের ভিড়ে প্রাণীকূলের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে থাকে। এ কারণে চিড়িয়াখানার চারজন পশু ডাক্তার নিয়োজিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি গরমে প্রাণীদের নিরাপদ রাখতে বাড়তি পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তথ্য মতে, ১৮৬ একর জায়গা নিয়ে গঠিত মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা দেশের সবচাইতে বড় চিড়িয়াখানা। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর হতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো দর্শনার্থী আসেন এখানে। চিড়িয়াখানায় রয়েছে মাংসাশী আট প্রজাতির প্রাণী ৩৬টি, ১৯ প্রজাতীর বৃহৎপ্রাণী (তৃণতোজী) ২৭১টি, ১৮ প্রজাতির ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ১৯৮টি।

এ ছাড়াও রয়েছে ১০ প্রজাতির সরীসৃপ ৭২টি, ৫৬ প্রজাতির পাখি ১১৬২টি, অ্যাকুরিয়ামে রক্ষিত ১৩৬ প্রজাতির মৎস্য ২৬২৭টি। সব মিলিয়ে রয়েছে মোট ১৩৭টি পশু-পাখির খাঁচা। কিন্তু বর্তমানে প্রণীশূণ্য খাচার বহর দেখে ৩০ টাকায় টিকিট করেও দর্শনার্থীদের অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এবার ঈদের ছুটিতে চিড়িয়াখানায় পাঁচ লাখ দর্শনাথীর আগমন ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ঈদে বাড়তি সুবিধা দিতে বিভিন্ন প্রাণীকূলের খাঁচা সংস্কার করা হয়েছে। হরিণেরসহ বেশ কিছু পশু-পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। দর্শনাথীদের সুবিধার্থে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির সমন্বয়ে ৯টি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কন্ট্রোলরুম ও তথ্য কেন্দ্রের সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চিড়িয়াখানাকে একটি বিনোদন ও শিক্ষামূলক দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জাতীয় চিড়িয়াখাকে বিশ্বমানের আধুনিক ও ডিজিটাল করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।