উপকূলে বাড়ছে জোয়ারের উচ্চতা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোরা’র প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলে বাড়ছে বাতাসের গতিবেগ ও জোয়ারের উচ্চতা। ঘূর্ণিঝড়টি এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে পৌনে ৬টার দিকে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে টেকনাফ উপকূলে আঘাত হেনেছে। এর প্রভাবেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধমকা হওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় মোরা কক্সবাজার ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র থেকে ১০০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস। এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। দ্বীপাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পয়েছে। উপকূলের নিম্নাঞ্চলঘুলো প্লাবিত হয়েছে। এখনো উপকূলের লাখ লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে রয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের জনপদে বেড়িবাঁধের বাইরে এখনো শতশত বাসিন্দারা তাদের কুড়ো ঘরে অবস্থান করছেন।

তারা ঝড়ের সর্বশেষ অবস্থান পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করছেন। তাদের দাবি এসব প্রাকৃতিক ঝড় জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলা করার মতো তাদের পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আঘাত হানলে ঘরবাড়ি ছেড়ে বড়জোর তারা বেড়িবাঁধের ভেতরে চলে আসতে পারেন।

আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বুলেটিনে (১৫) বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

‘মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ সহ ঘণ্টায় ৮৯-১১৭ কি. মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ক্যারিং চরের বাসিন্দা মো. হানিফ মুঠোফোনে বলেন, এলাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো কখনো বাতাসের গতি বাড়ছে আবার কখনো কখনো কমে যাচ্ছে। জোয়ারে নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন-চার ফুট বেড়েছে। এলাকায় অনেক আশ্রয় কেন্দ্র থাকলেও মানুষ সেগুলোতে যাচ্ছে না। আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে না। যে যার মতো করে চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে অবস্থান করছে।

তবে আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের যে পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে সে সম্পর্কে চরবাসীদের কেউ কিছুই জানেন না। তারা সাধারণভাবে আকাশ ও বাতাসের দিকেই তাকিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব লক্ষণ বোঝার চেষ্টা করছেন। উপকূলীয় অঞ্চলের নিন্ম চরাঞ্চলগুলোতে সাধারণ মানুষের বসবাসের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক গরু মহিষ রয়েছে। সাগরে পানি বৃদ্ধি পেলে উঁচু স্থান না থাকায় এসব এলাকায় ব্যাপক প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে।