একাদশ নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক বাড়াতে চায় ইসি

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দশম জাতীয় সংসদের মতো যাতে ‘বিতর্কিত’ নির্বাচন না হয় সে জন্য এবার এ ব্যবস্থা রাখছে ইসি।

এছাড়া সকল প্রার্থী যেন গণমাধ্যমে সমান সুযোগ পান সেই চেষ্টাও করবে ইসি। চূড়ান্ত করা কমিশনের নির্বাচনী রোডম্যাপ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত ১৪ মে (রোববার) অনুষ্ঠিত ইসির বৈঠকে খসড়া প্রস্তাবিত রোডম্যাপের অনেক অনুষঙ্গ বাদ দিয়ে একটি চূড়ান্ত নির্বাচনী রোডম্যাপ করা হয়েছে। সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির জন্য আইনি সংস্কার আনবে ইসি। এ জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের মতামত নেয়া এবং আগামী জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিধান চূড়ান্তের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

খসড়া ও নতুন রোডম্যাপ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১৪ মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উত্থাপিত রোডম্যাপে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দলের আপত্তির কারণে ‘ইভিএম’ রোডম্যাপ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। বাদ পড়ছে ইসির খরচে ভোটার স্লিপ বিতরণ, ডিজিটাল মনিটর স্থাপন এবং নির্বাচনী ব্যয় মনিটরিং। এছাড়া আগের রোডম্যাপ ১৭ পৃষ্ঠার হলেও নতুন প্রণীত কর্মপরিকল্পনা মাত্র চার পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।

চূড়ান্ত রোডম্যাপ অনুযায়ী, ৩০০ সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ চলবে আগস্ট থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। ভোটারদের তালিকাভুক্ত, মৃত ভোটারদের কর্তন এবং ভোটার এলাকা স্থানান্তর কার্যক্রম শেষ করতে চলতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছর ১৮ জুনের মধ্যে সময়সীমা রাখা হয়েছে।

নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের ব্যবস্থা নেয়া হবে আগামী বছর জুলাই থেকে ভোট গ্রহণের আগ পর্যন্ত। এর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ইসির জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, জেলা পর্যায়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিং, ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির প্রশিক্ষণ এবং মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণ উপকরণ প্রেরণ।

এছাড়া রোডম্যাপে নির্বাচনী ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনা এবং নির্বাচনী বিভিন্ন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অভিযোগপ্রাপ্তি, মনোনয়নপত্র দাখিল, ভোটকেন্দ্র ও ভোটার নম্বর প্রদান এবং ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা করা।

আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নির্বাচনী প্রচারে যেন সমান সুযোগ পায়, সেজন্য প্রেস ও টিভি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনকালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইসি নিজেই উদ্যোগ নেবে। এছাড়া দশম সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ না থাকার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি কম ছিল। ফলে ওই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিদেশিরা প্রশ্ন তুলেছিল। তবে এবার যেন এ ধরনের প্রশ্ন না ওঠে, সেই লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পর্যবেক্ষক নিয়োগে তৎপর থাকবে ইসি।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে ইসি। এছাড়া সব প্রার্থী যেন গণমাধ্যমে সমান সুযোগ পান সে ব্যবস্থাও করা হবে।

আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম থাকছে না বলেও জানান তিনি।