এবারো ফলে এগিয়ে মেয়েরা

পাবলিক পরীক্ষায় মেয়েদের ক্রমাগত ভালো করার রীতি এবারও অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষাতেও ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি ভালো করেছে। চলতি বছর মেয়েদের পাসের হার প্রায় তিন শতাংশ বেশি। একে নারী শিক্ষা বিস্তারে সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফল হিসেবে দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারপ্রধানের হাতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল তুলে দিয়ে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।

বাংলাদেশে নারী শিক্ষার বিস্তারে ৯০ এর দশক থেকে নানা উদ্যোগ নিয়ে আসছে সরকারগুলো। চলতি শতকের প্রথম দশকেও টেলিভিশনগুলোতে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহ দিতে কার্টুন প্রচারিত হতো, যার মূল বার্তা ছিল ‘মাইয়ারাই স্কুলে যাইব’।

মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি কর্মসূচিও এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এসএসসি পর্যন্ত মেয়েরা এখন সংখ্যায় এগিয়ে গেছে। এইচএসসিতেও এবার প্রায় সংখ্যাটা প্রায় কাছাকাছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রীদের ভাল করার ট্রেন্ড অব্যাহত আছে। এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রদের সংখ্যাটা বেশি। ছাত্রীর সংখ্যা কম। কিন্তু পাস করার হার ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের বেশি।’

মন্ত্রী জানান, এবার মোট ছয় লক্ষ ২৪ হাজার ৭৭৫ জন ছাত্র এবং পাঁচ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫৯৫ জন ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল। ছাত্রদের মধ্যে পাসের হার ৬৭.৬১ শতাংশ। আর মেয়েদের পাস করার হার ৭০.৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ মেয়েরা ২.৮২ শতাংশ বেশি পাস করেছে।

শিক্ষায় মেয়েদের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আসছেন। প্রায়শ তিনি রসিকতা করে বলেন, জেন্ডার সমতা বাংলাদেশে উল্টো হয়ে গেছে। এখন ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে এগিয়ে গেছে।

সাপ্তাহিক একতার সম্পাদক এ এন রাশিদা বেগম বলেন, ‘মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে এটা ভাল খবর, তবে মেয়েদের এগিয়ে যাবার পথে যেন ছেলেদেরকেও এগিয়ে নেওয়া হয়। তা না হলে ছেলেরা পিছিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা ভাবার কারণ নেই মেয়েরা এগুলেই সমাজ পরিবর্তন হবে। ছেলেদেরকেও সেই সুযোগটা দিতে হবে।’

ছেলেরা পিছিয়ে পড়লে পরিণতি কী হয় সেটা উল্লেখ করে রাশিদা বেগম বলেন, ‘ছেলেদের পিছিয়ে পড়া সমাজের জন্য অশনি সংকেত। এই যে মেয়েদের ইপর নীপিড়ন হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে এর কারণও কিন্তু ছেলেদের পিছিয়ে পরা। তাই শিক্ষার ক্ষেত্রে তাদেরকেও উৎসাহিত করা হোক। যেন সমতা আসে। তাহলেই আমার এগিয়ে যাব।’