এবার আত্মহত্যার চেষ্টা কলকাতার নায়িকা শুভশ্রীর

এবার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন কলকাতার হিট নায়িকা শুভশ্রী। এর আগে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন আরেক নায়িকা মিমি। তবে তাদের দুজন কিন্তু একই কারণে এই আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। তারা একজন পরিচালকের জন্য এমন করছেন। দুজনেই ভালবাসেন তরুণ পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে। তাকে নিয়েই যতসব কান্ড।

গত বছর আগস্ট মাসে তুরস্কে শুটিং করতে যাওয়ার পর রাজ-মিমির সম্পর্ক ভেঙে যায়৷ এই সম্পর্ক ভাঙায় মিমি যে খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না, তা স্বীকার করেছেন প্রকাশ্যেই৷ কিন্তু পরের মাস থেকেই শুভশ্রীর সঙ্গে রাজের সম্পর্ক ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে৷ দু’জনেই অল্প দিনের মধ্যেই গভীর প্রেমে ডুবে যান৷ আগামী জানুয়ারি মাসে দু’জনের বিয়ের দিনও ঠিক হয়ে যায়৷ পিসি চন্দ্র গার্ডেনে বিয়ের ভেন্যু ঠিক হওয়ার পাশাপাশি খাবারের মেনু চূড়ান্ত হয়৷ অতিথি অভ্যাগতদের নামের তালিকাও অনেকটাই চূড়ান্ত করে ফেলেন পরিচালক৷ এমনকী, শুভশ্রী কী পোশাক পরে কনে সাজবেন, বউভাতের দিন কী কী গয়না পরবেন তার তালিকাও তৈরি হয়ে যায়৷ এখানেই শেষ নয়৷ ঠিক হয় বিয়ের পর রুবি হাসপাতালের পিছনে আরবানায় রাজের নতুন ফ্ল্যাটে থাকবেন রাজ-শুভশ্রী৷ সেই ফ্ল্যাটের ইন্টিরিয়র শুভশ্রীর পছন্দমতোই তৈরি করান রাজ৷ কোন দেওয়ালের কী রং হবে, তাও হবু স্বামীর সঙ্গে বসে ঠিক করে দেন শুভশ্রী৷ এই পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল৷

কিন্তু গত মাস দেড়েক ধরে পুরনো প্রেমিক রাজের সঙ্গে মিমির ঘনিষ্ঠতার খবর আসতে শুরু করে৷ দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে দানা বাঁধে৷ আলিপুরে রাজ্য সরকারের অডিটোরিয়াম ‘উত্তীর্ণ’ উদ্বোধনে রাজ-মিমিকে একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায়৷ দু’জনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে অনেকেরই সেদিন স্পষ্ট ধারণা জন্মায়, ফের কাছাকাছি এসেছেন রাজ-মিমি৷ এরপর দু’জনকে একসঙ্গে অন্য কর্মসূচিতেও দেখতে পাওয়ার খবর পান শুভশ্রী৷ ঘনিষ্ঠরা তাঁকে জানিয়ে দেয়, পুরনো প্রেমের টানে মিমির কাছে ফিরে গিয়েছেন পরিচালক৷

দিনকয়েক আগে শুভশ্রী সটান রাজের অফিসে গিয়ে প্রশ্ন করেন, “মিমির সঙ্গে তোমার সম্পর্ক নিয়ে যা শুনছি, তা কি সঠিক?” উত্তরে পরিচালক মাথা নেড়ে সম্মতি জানাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শুভশ্রী৷ আর তখনই রাজ জানিয়ে দেন, “আমার পক্ষে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক আর টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়৷” হতাশ হলেও কিছুটা চাপ সৃষ্টি করে শুভশ্রী ঘরে ফিরে আসেন৷ পরিবারের সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দেন৷ এমনকী সংবাদমাধ্যমে শুভশ্রীর পরিবারের তরফে ফোন করে রাজের ‘মুখোশ’ খুলে দিতে বলা হয়৷ ঘটনা শোনার পরই চাপে পড়ে মঙ্গলবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন মিমি৷ খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান রাজ৷ সারাদিন সঙ্গে থেকে সুস্থ করেন মিমিকে৷ বুধবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার অফিসে আসেন অভিনেত্রী৷ সেখানে অবশ্য গোটা বিষয়টিকে ‘গসিপ’ বলে উড়িয়ে দেন মিমি৷ পরবর্তী শুটিং নিয়ে কথাও বলেন৷

মিমির ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়া ও রাজের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং শুশ্রুষা করিয়ে ফেরত আনার পুরো ঘটনা শুনে ভেঙে পড়েন শুভশ্রী৷ হতাশা ও ক্ষোভে হাইল্যান্ড পার্কে নিজের ফ্ল্যাটে সন্ধে থেকেই ছটফট করছিলেন৷ রাতে লাইটার থেকে নিজের পোশাকে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে নিভিয়ে দেন৷ এরপরই রাত দেড়টা নাগাদ ওই আবাসনেই রাজের ফ্ল্যাটে যান শুভশ্রীর পরিজনরা৷ কিন্তু তাঁদেরও রাজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শুভশ্রীর সঙ্গে সম্পর্ক টেনে নিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে আর সম্ভব নয়৷ দুই অভিনেত্রীকে ঘিরে পরিচালকের ত্রিকোণ প্রেমের এমন পরিণতিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তোলপাড় টালিউড৷ অনেকেই বলছেন, রাজ সবসময় নিজের কমিটমেন্টকে গুরুত্ব দেয়৷ সম্ভবত পুরনো প্রেমিকা মিমির ফিরে আসা আগের কমিটমেন্টকেই জোরাল করেছে৷ এখন অপেক্ষা পরবর্তী দৃশ্যের জন্য৷