কমলাপুর যেন আজ জনসমুদ্র

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির শেষ দিন আজ মঙ্গলবার। আর তাই টিকিট প্রত্যাশীদের সমাগমে কমলাপুর রেল স্টেশন যেন আজ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। অগ্রিম টিকিট কিনতে অনেকেই আগের রাতে অবস্থান নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।

কাউন্টারের সামনে থেকে টিকিট ক্রেতাদের সারি এঁকেবেঁকে স্টেশনের চত্বর ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সময় যত গড়াচ্ছে, টিকিট প্রত্যাশীদের লাইনও তত দীর্ঘ হচ্ছে। ফলে টিকিট বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন কাউন্টারের কর্মকর্তারা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৩১ আগস্টের টিকিট। ২৩টি কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। যার মধ্যে ২টি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত।

কমলাপুর রেল স্টেশন ঘুরে ৩১ আগস্টের টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগই বেসরকারি চাকরিজীবী এবং বিভিন্ন পেশায় কর্মরত। ছুটি কম থাকায় ঈদ উদযাপনে নাড়ির টানে তারা ৩১ আগস্ট বাড়ি যাবেন।

দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষা করছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মকিদুর রহমান। তিনি বলেন, ঈদের সময় ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড় হয়।পরিবার পরিজন নিয়ে সেই সময় ট্রেনে ওঠাই মুশকিল। এসব জেনেও ট্রেনের টিকিট কাটতে এসেছি কারণ সড়ক পথে অতিরিক্ত যানজট হওয়ার শঙ্কা আছে এবার। কিন্ত আজ টিকিট কাউন্টারে এতো ভিড় যে টিকিট পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই দেখছি না।

অন্যদিকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসের ট্রেনের এসি টিকিট শেষ জেনে কাউন্টারে কর্মরতদের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবি নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ভোরে এসে টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়েছি। কাউন্টের পৌঁছানোর আগেই শুনলাম এসি টিকিট শেষ। তাহলে এতো কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে লাভ কি?

এ বিষয়ে কাউন্টারের কর্মরতরা জানান, ঈদের সময় সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে এসি টিকিটের। সবাই এসি টিকিট চায়। তাই সবচেয়ে আগে এসি টিকিট শেষ হয়ে যায়।

কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী জানান, আজ বিক্রি হচ্ছে শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ আগস্টের টিকিট। সারা দিনে বিক্রি হবে ২৫ হাজার ১০২টি টিকিট। এছাড়া অন্যান্য চলতি ট্রেন মিলিয়ে টিকিট বিক্রি হবে ৫০ হাজার। কিন্তু আজ কমলাপুরে টিকিট প্রত্যাশী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। যতজন লাইনে দাঁড়িয়েছে তাদের সবাইকে আমরা টিকিট দিতে পারবো না, কারণ আমাদের সম্পদ সীমিত। এর মধ্যেই আমরা যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, মোট টিকিটের ৬৫ শতাংশ দেয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশের মধ্যে ২৫ শতাংশ দেয়া হচ্ছে অনলাইন ও মোবাইলে। ৫ শতাংশ ভিআইপি ছাড়াও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার যাত্রী আনা নেয়া করবে রেলওয়ে। আগামী ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর এবং ঈদের পর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।