কিশোরী স্ত্রীকে জীবন্ত পুঁতে ফেলার চেষ্টা!

বগুড়া: নির্যাতনের এ পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন কিশোরী স্ত্রী। তাতেও ক্ষেন্ত হননি যৌতুক লোভী স্বামী। ঘরের মেঝেতে জীবন্ত পুঁতে ফেলার চেষ্টা। এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়।

২০১৪ সালে মেয়েটি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ত তখন পাশের গ্রাম উত্তর কৃষ্টপুরের ভটভটি চালক সাদ্দাম হোসেনের (২৫) সঙ্গে বিয়ে হয়। এর পর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে তাকে মারধর করতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবারও তাকে নির্যাতনের এক পর্যায়ে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করে সাদ্দাম। এ ঘটনায় বুধবার শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে।

গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নির্যাতন শুরু করেন সাদ্দাম, যৌতুকও দাবি করেন। মেয়েটির গরিব বাবা-মা বেশ কয়েকবার জামাতার টাকার দাবি পরিশোধ করেন। কিন্তু কয়েক দিন আগে সাদ্দাম এক লাখ টাকা দাবি করলে মেয়েটি বাবা-মায়ের কাছে তা চাইতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে সাদ্দাম অশান্তি শুরু করেন।

মঙ্গলবার কিশোরী স্ত্রীকে মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলেন সাদ্দাম। এরপর শোয়ার ঘরের মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে তাতে অচেতন স্ত্রীকে ফেলে গর্তে মাটিচাপা দিতে শুরু করেন। তখনই সেখানে ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ে তিন-চারজন এনজিওকর্মী যান। মেয়েটি ওই এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিল।

এনজিওকর্মীরা অনেক ডাকাডাকি করে কারও সাড়া না পেয়ে ধারণা করেন, কিস্তি এড়াতে বাড়ির লোকজন ঘরে লুকিয়েছে। বিষয়টি দেখতে তারা ঘরের টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিলে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেন। পরে সবাই এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন এবং সাদ্দামকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মেয়েটি জানায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী তাকে অপছন্দ করা শুরু করেন। যৌতুক দাবি করেন। মঙ্গলবার সকালে মারধরের একপর্যায়ে সাদ্দাম তার মাথায় আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর জ্ঞান ফেরে। তাই মারধর করার পর কখন কী হয়েছে, তার কিছু মনে নেই।

সাদ্দাম থানা হেফাজতে থাকার সময় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, মেয়েটি তাঁর কথা শুনত না। তাই ভয় দেখাতে মাটিচাপা দেয়া হচ্ছিল।

শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক জাহিদ হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সাদ্দামকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।