কুরবানি করা আবশ্যক যাদের

আল্লাহর জন্য ত্যাগের সর্বোচ্চ মাধ্যম হলো কুরবানি। এটা বান্দার সঙ্গে আল্লাহর প্রেমের অনন্য নির্দশন। যুগে যুগে সব নবি রাসুলের ওপরই এ কুরবানি হুকুম জারি ছিল।

তবে বর্তমানে যে কুরবানি করা হয়, তা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের কুরবানির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত কুরবানির প্রতিচ্ছবি। এ কুরবানি ত্যাগের, প্রেমের এবং নৈকট্য লাভের। যে কারণে তা কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর যথাযথ ভাব-গাম্ভীর্য ও মর্যাদায় পালন করবে।

আল্লাহ সামর্থ্যবান সব জ্ঞানবান, প্রাপ্তবয়স্ক স্থায়ী মুসলিম পুরুষ ও নারীর জন্য এ কুরবানি আদায়কে আবশ্যক করেছেন। কুরবানি আদায় করার জন্য যে শর্তগুলো বিশেষভাবে প্রযোজ্য তাহলো-

কুরবানি আদায়ের শর্ত

>> যে ব্যক্তির নিকট নেসাব পরিমাণ মাল বা সম্পদ থাকবে তার জন্য কুরবানি করা আবশ্যক। এ মাল বা সম্পদ পূর্ণ এক বছর থাকতে হবে এমন কোনো শর্ত নেই। যে ব্যক্তি ১০ জিলহজ ফজর হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকবে, ওই ব্যক্তি কুরবানি আদায় করবে।

>> পারিবারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য যে পরিমাণ জমি বা ফসলের দরকার; সে পরিমাণ থেকে অতিরিক্ত জমি বা ফসলের মূল্য অথবা যে কোনো একটির মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্যের সমান হয়। তাহলে ওই ব্যক্তির জন্যও কুরবানি করা আবশ্যক।

>> পরিবারের সব সদস্য যদি আলাদা আলাদাভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়; তবে সবার জন্য কুরবানি করা আবশ্যক।

>> গরিব ব্যক্তি যদি কুরবানির নিয়তে কুরবানির পশু ক্রয় করে তবে ওই ব্যক্তির ওপর কুরবানি সম্পন্ন করা আবশ্যক।

>> যদি কেনো ব্যক্তি কুরবানির মান্নত করে তবে তা পূর্ণ করাও আবশ্যক।

>> নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যত সম্পদের অধিকারী হোক না কেন তার ওপর একটি কুরবানিই আবশ্যক। সম্পদ বেশি বলে একাধিক কুরবানি করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। অবশ্য একাধিক কুরবানি করলে অনেক ছাওয়াব লাভ হয়।

এক কথায়, যার ওপর সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব, ওই ব্যক্তির ওপর কুরবানিও ওয়াজিব। অতএব প্রত্যেক স্বাধীন, ধনী, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক নর-নারীর উপর কুরবানি আদায় করা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক সামর্থবান ব্যক্তিকে কুরবানি করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।