কুষ্টিয়ায় আবাসিক হোটেলে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা

কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মজমপুরে অবস্থিত প্রাইম আবাসিক হোটেল। আবাসিক হোটেলের নামে পরিচিতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে চলে আসছে অনৈতিক কাজ। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। আর এই অবৈধ পতিতালয়ে উঠতি বয়সী ছেলেদের আনাগোনাই বেশি। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। এতে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ।

দীর্ঘদিন ধরে হোটেলে এই ব্যবসা চলে আসছে, বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার রেজাউল। অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করা হয় বলে জানান এই হোটেল ম্যানেজার।

সরেজমিন গেটে ঢুকতেই দেখা গেছে— বাবু সোনা আসো বলে রিসিপশনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন। তারপর ভিতরে ঢোকার অনুমতি নিতে লাগবে ২০ টাকা। দ্বিতীয় ধাপে আসবে কাস্টমারের পছন্দর নারী খোঁজা। সেখানে মাত্র ৩০ টাকা দিলেই মিলবে ইচ্ছে মতো রমনীদের দেখে-শুনে কথা বলে পছন্দ করার বিষয়টি।

কয়েকটি রুমে রয়েছে একাধিক নারী। বিভিন্নভাবে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করতে তারা ব্যস্ত। পছন্দ হলে চলে আর্থিক লেনদেনের দরকষাকষি। পছন্দ না হলে কেউ ফিরেও আসছেন। সেক্ষেত্রে দুইধাপে দেওয়া ৫০ টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না।
বাস্তবে এমন চিত্র দেখা গেছে যে, দরকষাকষির এক পর্যায়ে হোটেল থেকে ফিরে আসতে গেলে যে কোনো একজন একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে কিছু অশ্লীল কথা বলছে। একই সাথে বিভিন্নভাবে অঙ্গাভঙ্গির মাধ্যমে আকৃষ্ট করার চেষ্টাও করছে পতিতারা।

কৌশলে পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী এবং বাড়ি ঢাকায় বলে দাবি করেন একজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অবৈধ দেহ ব্যবসায় জড়িতরা ভ্রাম্যমাণ পতিতা। এদের বড় ধরনের নেটওয়ার্ক আছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে এই অবৈধ ব্যবসা করেন তারা।
সরেজমিন পরিদর্শনে হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং পতিতাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের ১৫ মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।

প্রাইম আবাসিক হোটেলটি শহরের মজমপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। আবাসিক হোটেলের নামে দিনের পর দিন চলছে এই রমরমা দেহ ব্যবসা। এখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সী তরুণসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের আনাগোনা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাইম আবাসিক হোটেলে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, আমি এখানে চাকরি করি। হোটেলের মালিক পক্ষ বিভিন্ন বয়সের নারীদের নিয়ে এসে পতিতাবৃত্তি চালিয়ে আসছেন। এই হোটেলে যে কোনো সময়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ধরনের নারীর দেখা মিলবে বলে জানান তিনি।

আবাসিক হোটেলের নামে এই অবৈধ পতিতালয়ের ব্যবসার বিষয়ে প্রাইম আবাসিক হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার রেজাউল মুঠোফোনে জানান, আমরা কয়েকজন লোকাল মেয়েকে নিয়ে এ ব্যবসা করি এ কথা সত্য। অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করি। আমি অন্য চাকরি খুঁজছি এই কাজ ছেড়ে দিবো বলে। আসলে আমারও পরিবার আছে। অন্য চাকরি পেলেই এ কাজ ছেড়ে দিব। এই নিউজ না করার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন হোটেল ম্যানেজার রেজাউল।

এ বিষয়ে জানার পর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, আজকেই বন্ধ হয়ে যাবে প্রাইম আবাসিক হোটেলটি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।