খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে সরকার ভুল করবে না

রাজনৈতিক প্রভাবজনিত গ্রেফতারি পরোয়ানায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে সরকার ভুল করবে না বলে মনে করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।

তিনি বলেন, অনেকে জানতে চেয়েছে, ওনার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়ে গেছে, এখন কী হবে? কিছুই হবে না। উনি আসবেন। সরকার এ ভুল করবে না।

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদ বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাভাবিকভাবে এভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা হয় না। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কোনো কারণ ছিল না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আদালত ও আইনকে সম্মান জানানোর জন্য চিকিৎসার কিছু বাকি রেখে দেশে ফিরে আসছেন। তিনি কোর্টে যাবেন। নিয়ম হচ্ছে ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে যদি আসামি আবার কোর্টে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন, সঙ্গে সঙ্গে ওয়ারেন্ট সেখানেই শেষ হয়ে যায়। জামিনও সঙ্গে সঙ্গে পুনঃবহাল হয়।

মওদুদ বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে নিয়ে সরকারের যে আচরণ দেখলাম-এতে আমরা শংকিত। এটা গোটা জাতির জন্য একটা লজ্জা। প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠান। সরকার ইচ্ছে করেই এই প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা চুরমার করে দিয়েছে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তা উনি বিদেশে চলে যাওয়ার পর আনা সঠিক নয়। তাছাড়া যেখানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আছে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে দিয়ে তদন্ত আইনসম্মত নয়। এটা হলো প্রধান বিচারপতিকে আরও হেয় করা, বিচার বিভাগকে হেয় করা।

জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, তিনি অতি সত্য বলেছেন। তিনি তো মিথ্যা কথা বলেননি। শহীদ জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতাসীন হলেন, তখন একদলীয় শাসন ছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যেসব বক্তব্য আসছে অত্যন্ত দুঃখজনক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানের পথে পৌঁছাতে না পারলে অর্থনীতিতে বিরাট একটা চাপ পড়বে। এমনকি এর জন্য উগ্রবাদের একটা আশংকাও আছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত-চীন ও রাশিয়াকে সরকার পাশে রাখতে না পারা সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সরকার জাতীয় ঐক্যের আহ্বান করলে তাতে আমরা সাড়া দেব বলে জানান তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।