খালেদা জিয়া ‘নোংরা’ রাজনীতি শুরু করেছেন : হানিফ

চট্টগ্রামের পাহাড় ধসের ঘটনা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এ সময় তিনি খালেদা জিয়াকে ‘নোংরা’ রাজনীতি বন্ধ করার এবং এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে স্বোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। রবিবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘রমজানে ইফতারের আগে মানুষ আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও শান্তির জন্য দোয়া করেন। আর খালেদা জিয়া ইফতারকে সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, মিথ্যাচার করছেন, কুৎসিত কথাবার্তা বলে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই ঘটনার পরপরই সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের পদক্ষেপে সেখানকার জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। অথচ খালেদা জিয়া বলেছেন, ভূমিধসের সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী নাকি প্লেজার ট্রিপে সুইডেন গিয়েছিলেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার খালেদা জিয়া কীভাবে একটি রাষ্ট্রীয় সফরকে প্লেজার ট্রিপ হিসেবে অভিহিত করেন?এ ধরনের মন্তব্য মূর্খতার শামিল বলে জনগণ মনে করে।’

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ৪ দিন পরে তিনি সেখান যান। উনি বলেছিলেন ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ নাকি মারা যাননি।দেশবাসী এ কথা ভুলে যাননি। ওই ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ প্রাণ হারানোর পরেও খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য করে প্রমাণ করেছিলেন দেশের জনগনের প্রতি তার কোনও দায়িত্ব নেই। জনগণের প্রতি তার কোনও মায়া-মমতা নেই। সেই খালেদা জিয়া আজ আমাদের ওপর দোষারোপ করতে আসেন।’

প্রধানমন্ত্রীর সুইডেনে সরকারি সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশর স্বাধীনতার পরে ইউরোপিয় দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সুইডেন আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিলো। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে গিয়েছিলেন। প্লেজার ট্রিপ কী? সেটা কি খালেদা জিয়া জানেন না? আসলে তার জানার কথাও নয়। কারণ সেই সময় তো তিনি পাকিস্তানি সেনাবহিনীর সঙ্গে ছিলেন। উনি সেই সময় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানের সেনাদের সঙ্গে প্লেজার ট্রিপে ছিলেন। তার বাংলাদেশের স্বাধীনতার সম্পর্কে জানার কথাও নয়। তার দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নেই বলেই আজকে এ ধরনের মতপ্রকাশ করছেন। খালেদা জিয়ার সমস্ত দেশপ্রেম আবেগ অনুভূতি প্রেম মহব্বত পাকিস্তানে রয়ে গেছে। যার কারণে তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন দেশ প্রেমের কথা বলেন। কিন্তু জাতি তার সময়ে কাজ ভুলে যায়নি। উনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গাপানি চুক্তির কথা তো ভুলেই গিয়েছিলেন। তিনি দেশের স্বার্থের কথা ভুলে যান। উনি ওই সময় প্লেজার ট্রিপে গিয়েছিলেন বলেই চুক্তির কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলেন। আর আজকে উনি আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘উনি মানুষ খুনের কথা বলেন। ২০১৫ সালে এ দেশের মানুষেকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো তা মানুষ ভুলে যায়নি। খালেজা জিয়া ক্ষমতার জন্য মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। উনি আজকে দেশপ্রেম নিয়ে কথা বলেন। মানবপ্রেম নিয়ে কথা বলেন।জনগেণকে নছিয়ত করেন। দেশবাসীকে আশস্ত করতে চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের জনগণের জন্য যেকোনও ক্রান্তিকালে যেভাবে ছুটে গিয়েছেন। জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে কাছে টেনে নিয়েছেন। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাঁর আস্থা আছে, আস্থা থাকবে।যতদিন শেখ হাসিনা থাকবে। ততদিন দেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে। দেশ নিরাপদ থাকবে। দেশ এগিয়ে যাবে।’