কাপ্তাই বাঁধ খুলে দেয়ায় কর্ণফুলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

রাঙামাটি : পাহাড় ধসের পর এবার নতুন দুর্যোগ দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে। শুক্রবার (১৬ জুন) রাতে কাপ্তাই বাঁধ ও কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাপ্তাই বাঁধের স্প্রিলওয়ের ১৬টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

এতে কর্ণফুলী নদীতে পানি বেড়ে চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে রাঙামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় খাবার ও জ্বালানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

অতিবর্ষণে পাহাড় ধসের পর, এখন কাপ্তাই লেকে পানি বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে। এতে রাঙামাটির বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে হুমকিতে পড়েছে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

কাপ্তাই বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় কাপ্তাই লেক থেকে প্রতি সেকেন্ডে ৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এর ফলে কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোত সৃষ্টির পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর নিম্নাঞ্চল রাঙ্গুনিয়া, রাউজান এবং বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবদুর রহমান জানান, প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কাপ্তাই লেকে এই সময়ে ৭৯ এমএসএল (মিনস সি লেবেল) পানি থাকার কথা। কিন্তু শনিবার সকাল ৮টায় কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা ছিল ১০৭ এমএসএল। এই অবস্থায় কাপ্তাই বাঁধের সুরক্ষা ও কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তার স্বার্থে কাপ্তাই লেক থেকে অতিরিক্ত পানি স্প্রিলওয়ের মাধ্যমে অপসারণ করে কর্ণফুলী নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার কাপ্তাই বাঁধের স্প্রিলওয়ের ১৬টি গেটের সবকটি গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা বাড়তে থাকায় লেকের পানি নিরাপদ উচ্চতায় না নামা পর্যন্ত স্প্রিলওয়ে খোলা থাকবে।

এদিকে কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, কাপ্তাই লেকে পানির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। কিন্তু শুক্রবার ১০৭ এমএসএল পানি জমা হওয়ার পরই কাপ্তাই বাঁধের স্প্রিলওয়ে খুলে দেওয়ায় কর্ণফুলী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, বোয়ালখালী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধির ফলে ২৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন এই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পূর্ণ ক্ষমতা ছাড়িয়ে পিক আওয়ারে সর্বোচ্চ ২৪২ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।