গরীব রোগীর জন্য বাইক অ্যাম্বুল্যান্স

টাকার অভাবে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন উড়িষ্যার দানা মাঝি। আর সে খবর সামাজিক যোগাযোগ ও সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় মানবিক বিক্ষোভ। একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল তেলেঙ্গানার ৫৩ বছরের রামলুলুর। রামলুলু ও তার স্ত্রী দু’জনই কুষ্ঠরোগী। টাকার অভাবে স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে টানা ২৪ ঘণ্টা ৮০ কিলোমিটার পথ হেঁটে গিয়েছিলেন তিনি।

শুধু তাই নয়, অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে হাসপাতালে পৌঁছতে না পেরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে প্রতিনিয়ত। এসব ঘটনাই ভাবিয়ে তুলে হায়দরাবাদের মোহাম্মদ শাহজর খানকে। তাই অন্যদের মতো শুধুই বিলাপ না করে সমাধানের পথ বের করেছেন তিনি।

৪৩ বছরের শাহজর একটি মোটর গ্যারাজের মালিক। মানুষের কথা মাথায় রেখে, হিরো এইচএফ ডিলাক্স মোটরবাইকের সঙ্গে একটি সাইডকারকে আ্যম্বুলেন্স বেডের মতো করে সাজিয়েছেন তিনি। রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সের সব রকমের সুবিধাও।

এ বছরের এপ্রিল থেকে শুরু করেছিলেন অ্যাম্বুল্যান্সটি তৈরির কাজ। মাত্র ৩৫ দিনে তৈরি হয় শাহজরের বাইক অ্যাম্বুল্যান্স। যেটিতে রয়েছে রোগীর বিছানা, স্যালাইন স্ট্যান্ড, চাদর-বালিশ, অক্সিজেন সিলিন্ডার, মেডিকেল কিটসহ সবকিছুই।

এটি তৈরি করতে খরচও পড়েছে কম। মাত্র সোয়া লাখ টাকায় শাহজর অ্যাম্বুল্যান্সটি বানিয়েছেন। গাড়িটি আকারে ছোট হওয়ায়, ট্রাফিক জ্যাম থেকে সহজেই বেরিয়ে পড়তে পারবে ব্যস্ত সময়েও। তবে অ্যাম্বুল্যান্সটি শুধুমাত্র একজন রোগীর জন্যই। অর্থাৎ রোগীর সঙ্গে অন্য কেউ উঠতে পারবেন না।

সেটি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে গরীব রোগীদের হাসপাতালে আনা নেয়ার কাজে। এর জন্য যে টাকা নেয়া হয়, তা খুবই সামান্য। তারপরও কীভাবে এ চার্জ আরও কমানো যায়, তা চেষ্টা করছেন শাহজর। তাতে আরও অনেক দরিদ্র মানুষ অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহার করতে পারবেন।