ঘরমুখো মানুষের স্রোত এখন বাস ট্রেন লঞ্চ টার্মিনালে

দিন দুয়েক আগে থেকে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা শুরু হলেও তাতে ‘ঈদের ভিড়ের’ আবহ খুব একটা ছিল না। বৃহস্পতিবার ঈদের ছুটির আগে শেষ কার‌্যদিবসে প্রকৃত ঈদযাত্রার চিত্র দেখা গেছে রাজধানীজুড়ে। দুপরের পর থেকে রাজধানীর বাস টার্মিনাল, লাঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের বাঁধভাঙা স্রোত।

আজ সকালে কমলাপুরে ট্রেনে তেমন ভিড় না থাকলেও দুপুরের পর চিত্র বদলাতে থাকে। তবে স্টেশনের একজন কর্মী জানান, ট্রেনের প্রকৃত ভিড় ঘটবে বিমানবন্দর স্টেশনে। রাজধানীর বড় একটা অংশের যাত্রীরা সেখান থেকেই ট্রেনে চড়ে।

তবে দুপুরের পর কমলাপুরেও মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের স্রোত। কেউ সপরিবারে, আবার কেউ একাই আসছেন এক বা একাধিক ব্যাগ নিয়ে। সব জায়গাতেই প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা দেখা গেছে। কমলাপুরের প্রধান ফটকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করে প্লাটফর্মে প্রবেশ করতে দিচ্ছে।

আজ সকালে কমলাপুর থেকে সব কয়টি ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যায়। কমলাপুর স্টেশন থেকে ২ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে নির্ধারিত সময় সকাল সাতটায় ছেড়ে যায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এর আগে নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যায় পারাবত ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি। উত্তরবঙ্গগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটিও তার নির্ধারিত সময়ে নয়টায় ছেড়ে গেছে কমলাপুর স্ট্রেশন থেকে। মহানগর প্রভাতী, তিস্তা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসও নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যায়।

নির্ধারিত সময় দুইটা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার আগে কথা হয় ওই ট্রেনের যাত্রী আমান হোসেনের সঙ্গে। আমান বলেন, বিগত দিনের অভিজ্ঞতায় স্টেশনে আসার আগে মনে হয়েছিল ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হবে। কিন্তু এবার সেরকম হয়নি। অন্যবার ট্রেনের ভিতরে পা ফেলার উপায় ছিল না। ট্রেনও ছেড়ে যাচ্ছে সময় মতোই।

বেসরকারি চাকরিজীবী নাভিদ কামাল রাজশাহীগামী সিল্ক সিটির ঈদের অগ্রিম টিকিট নিয়েছিলেন ১৩ জুন। ঈদযাত্রা নিয়ে আলাপকালে নাভিদ বলেন, প্রিয়জনের টানে প্রতি বছরই ঈদে বাড়ি যাই। কম-বেশি সব সময় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আজকে এখন পর্যন্ত স্বস্তিতে আছি। বারবার মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে সিল্ক সিটি ট্রেনটি সঠিক সময়ে ছেড়ে যাবে। সামনের রাস্তাটাও ঠিক ঠিক যেতে পারলে যাত্রাটা আনন্দের হবে।’

ঈদে যাত্রীসেবার জন্য ট্রেনের সংখ্যা ও বগি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘আশা করছি যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন। আজ ট্রেনে কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি। সময়মতো ট্রেনগুলো স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে।

সিতাংশু তথ্যমতে, আজ কমলাপুর থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৬৮টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। এতে প্রায় ৭৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হবে বলে জানান তিনি।