চার আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

সিলেটের চাঞ্চল্যকর শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া চার আসামির ফাঁসি বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।

রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন রায়ের কপিতে স্বাক্ষরের পর আজ মঙ্গলবার এ রায় প্রকাশিত হয়।

এর আগে গত ১১ এপ্রিল সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া চার আসামির ফাঁসি বহাল রাখেন হাইকোর্ট।

ফাঁসির দণ্ড পাওয়া চারজন হলেন—মামলার প্রধান আসামি সিলেটের জালালাবাদ থানার শেখপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলাম, পীরপুর গ্রামের সাদিক আহমদ ময়না ওরফে ময়না চৌকিদার, শেখপাড়া গ্রামের তাজ উদ্দিন বাদল ও সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের জাকির হোসেন ওরফে পাভেল। এর মধ্যে জাকির হোসেন ওরফে পাভেল বর্তমানে পলাতক।

আদালত জালালাবাদ থানার পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নূর মিয়া ওরফে নূর আহমদকে যাবজ্জীবন ও শেখপাড়া গ্রামের দুলাল আহমদকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। লাশ গুমের চেষ্টার দায়ে আসামি কামরুলের ভাই শেখপাড়া গ্রামের মুহিদুল ইসলাম মুহিত, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে সাত বছর করে এবং সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার জাহাঙ্গীরগাঁও গ্রামের আয়াজ আলীকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে আসামি শামীম আহমদ পলাতক।

এ ছাড়া মামলা থকে বেকসুর খালাস পান জালালাবাদ থানার হায়দরপুর গ্রামের রুহুল আমীন, কুমারগাঁও গ্রামের আজমত উল্লাহ ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণ কুর্শি ইসলামপুর গ্রামের ফিরোজ আলী।

২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর রাজন হত্যা মামলায় আসামি কামরুলসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। ওই সময় একজনকে যাবজ্জীবন ও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। বেকসুর খালাস দেওয়া হয় তিনজনকে।

গত বছরের ১০ নভেম্বর রাজন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। গত ৩০ জানুয়ারি এই শুনানি শুরু হয়েছিল। পরে ১২ মার্চ মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়।

২০১৫ সালের ৮ জুলাই চুরির অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে। ফেসবুকে প্রচারের উদ্দেশ্যে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে নির্যাতনকারীরা। পরে লাশ গুম করার সময় ধরা পড়ে একজন।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করে।