জানেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করেছেন মাশরাফি?

খেলোয়াড় মাশরাফিকে তো চেনাই আছে। মাঠে মাশরাফি যেমন দুরন্ত, মাঠের বাইরে ততটাই অনন্য। মাশরাফি নড়াইলে গেলেই সাড়া পড়ে যায়। দেশের এক তারকা ক্রিকেটার আসবেন বলে নয়, মানুষ অপেক্ষা করে বিরাট হৃদয়ের এক মানুষের জন্য। যার হৃদয় কাঁদে দুস্থ, অসহায় মানুষের জন্য। ব্যথীত হন মানুষের দুঃখ-কষ্টে। হাতটা বাড়িয়ে দেন বিপদগ্রস্ত মানুষের দিকে। অনাথ শিশু এবং গরীবদের পাশে থাকতে ভালো লাগে তার।

নিরহংকার মাশরাফি বন্ধুকে স্বাবলম্বী করতে আর্থিক সংকটে হাবুডুবু খাওয়া কয়েকজন বন্ধুকে নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ পৌর সুপার মার্কেটে দোকান করে দেন মাশরাফি। বন্ধু রাজু, সাজু, অসীমকে জীবনের পথ দেখান।

এছাড়াও মাশরাফির অর্থায়নে চলে নড়াইলের ‘শুভেচ্ছা ক্লাব’। নানা আতাউর রহমানের নামে চালু হওয়া ক্রিকেট একাডেমি চলে মাশরাফির অর্থায়নে।

নিজের টাকায় আর্থিক সংকটে হাবুডুবু খাওয়া বন্ধুদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টার কোনো কমতি নেই ‘নড়াইল এক্সপ্রেসে’র। তাদের বুকে টেনে নেন মাশরাফি।

বন্ধুদের জন্য তার অকৃত্রিম ভালোবাসা, মানুষের বিপদে-আপদে এগিয়ে আসা, দুস্থজনের পাশে দাঁড়ানো—এ কারণেই নড়াইলে মাশরাফি দূর আকাশের তারা নন, যেন অতি আপনজন। খুব কাছের কেউ একজন। কেবলই নড়াইল কেন, মাশরাফি তো সারা বাংলাদেশের। কেবল ক্রিকেটার হিসেবেই নয়, আকাশসম হৃদয়ের এক মানুষ হিসেবে।

তবে জানেন কী? মাশরাফি নামক এই মহানায়ক কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করেছেন? ১৬ কোটি বাঙালির আস্থার প্রতীক ও বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ তম আবর্তনের ( ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষ ) দর্শন বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

গত বছর ২০ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের ৩৩তম ব্যাচের এক যুগপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও দেশের প্রথম নারী ভাইস চ্যান্সেলর ড. ফারজানা ইসলামকে সম্মাননা প্রদান করবে দর্শন বিভাগ।

অসামান্য এক প্রতিভাধর ক্রিকেটার তিনি। যেমনই প্রতিভা, তেমনই ব্যক্তিত্ব। সহজে মানুষকে আপন করে নেয়ার সবগুলো গুণ তার মধ্যে বিদ্যমান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় তথা সারা বাংলাদেশের গর্ব তিঁনি।

মাশরাফি,বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকার একজন শুধু নন। তারকা হয়েও তিনি দূরাকাশে নন, হাতের কাছেই থাকেন। মাশরাফি বলতে চান, ‘আমি তোমাদেরই লোক।’ মাশরাফি সত্যিই অন্য রকম!