‘জামায়াত-শিবির দেখা মাত্রই গণধোলাই’

জামায়াত-শিবিরকে দেখা মাত্রই গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই জন সাংগঠনিক সম্পাদক। সিলেটের জালালাবাদে সন্ত্রাসী হামলায় হাত কেটে ফেলা ছাত্রলীগ কর্মী শাহীন আহমদকে দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন তারা।

গত সোমবার বিকালে সিলেটের জালালাবাদের সোবহানীঘাটে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। হামলায় মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী সিলেট সদর উপজেলার পীরপুর টুকেরবাজারের শাহীন আহমদের হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার পায়েও গভীর ক্ষত তৈরি হয়। পরে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসকরা তার হাত কেটে ফেলেন। একই হামলায় গুরুতর আহত হন জালালাবাদ কলেজের ছাত্র আবুল কালাম আসিফও। তিনিও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।

এই হামলার জন্য জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরকে দায়ী করছে ছাত্রলীগ। সোমবার লক্ষ্মীপুরের ত্রিমোহনী এলাকায় শিবিরের দুই জন কর্মীকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। আর এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে শিবিরের ১২ নেতা-কর্মীকে বেদম পিটুনি দেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক বিক্ষোভে সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমার সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে শিবিরের বিরুদ্ধে ‘অ্যাটাকে’ যাওয়ার নির্দেশনা দেন। সোহাগ বলেন, ‘আমাদের আর ডিফেনসিভে বসে থাকলে চলবে না, এখন থেকে অ্যাটাকিংয়ে স্টাইকারের ভূমিকায় যেতে হবে।’

পরদিন পঙ্গু হাসপাতালে শাহীন আহমদকে দেখতে যান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও একেএম এনামুল হক শামীম। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন।

এনামুল হক শামীম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহীনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

হামলাকারী ‘শিবির কর্মী’দের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের তাগাদা দিয়ে শামীম, ‘ছাত্রলীগ সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ছাত্রলীগ এখন পর্যন্ত আইন হাতে তুলে নেয়নি। কিন্তু ঘটনার অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও হামলাকারী শিবির নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হয়নি। এটা দুঃখজনক।’

ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে যেখানেই ছাত্রশিবির পাওয়া যাবে সেখানেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিতে হবে। এই চক্র দেশের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না। তাদের বাঙলার মাটিতে রাজনীতি করার অধিকার নাই। একই সঙ্গে সরকারের কাছে আহ্বান জানাব-দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’

আহমদ হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রতি এমন বীভৎস নারকীয় তাণ্ডব কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’

‘যেখানেই জামায়াত-শিবির সেখানেই গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিতে হবে’- দলের নেতা-কর্মীদেরকে নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।