জীবনযাত্রায় বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ২১ দেশ

বিদেশযাত্রায় সহায়ক প্রতিষ্ঠান মুভহাব নতুন একটি জরিপে জীবনযাপনের ব্যয়ের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি তালিকা করেছে।

মুদি পণ্যের মুল্য, পরিবহন ব্যয়, বিল, রেস্টুরেন্ট এবং বাড়িভাড়ার নিরিখে মুভহাব এই জরিপ চালায়। এরপর কুখ্যাত ব্যয়বহুল শহর নিউ ইয়র্ককে একটি বেঞ্চমার্ক হিসেবে ব্যবহার করে একটি সূচক তৈরি করে মুভহাব।

নিউ ইয়র্ককে দেওয়া হয় ১০০ স্কোর। এরপর এই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বিশ্বের দেশগুলোর র‌্যাংকিং করা হয়। কোনো দেশের স্কোর ১০০ এর বেশি হলে সে দেশকে বেশি ব্যয়বহুল আখ্যা দেওয়া হয়। আর এর চেয়ে কম স্কোর হলে সস্তা হিসেবে গণ্য করা হয়। এরপর প্রতিটি দেশের গড় স্কোর করে একটি তালিক করা হয়। উদারহণত, যুক্তরাজ্য গড় স্কোর হলো ৫১.০৩। দেশটি তালিকার ২৯ নম্বরে আছে।

তালিকার শীর্ষ ২১টি দেশ হলো :
২১. ঘানা- ৫৩.৮৯ : আফ্রিকার আর যে কোনো দেশের চেয়ে ঘানার জীবন-যাপনের ব্যয় অনেক বেশি।

২০. ইটালি- ৫৩.৮৯ : ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতি জার্মানি এবং ফ্রান্সের চেয়েও ইটালি জীবনযাত্রা ব্যয়বহুল।

১৯. ইসরায়েল- ৫৪.১১ : কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় ইসারায়েল একটু বেশি ব্যয়বহুল।

১৮. কুয়েত- ৫৭.৩১ : কুয়েতের মুদ্রা দিনার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালি মুদ্রার একটি। কুয়েতের এক দিনার বাংলাদেশের ২৬৩ টাকার সমান।

১৭. জাপান- ৫৭.৬২ : সম্প্রতি জাপানের অর্থনীতি কিছুটা বন্ধ্যা হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেশটি এখনো বিশ্বের অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলোর একটি।

১৬. নিউজিল্যান্ড- ৫৮.২৬ : আমদানি নির্ভর দেশ নিউজিল্যান্ড বসবাসের জন্য বেশ ব্যয়বহুল একটি জায়গা।

১৫. যুক্তরাষ্ট্র- ৫৮.৫৯ : নিউ ইয়র্ক এবং লস অ্যাঞ্জেলেস এর মতো বড় বড় শহরগুলো বেশ ব্যয়বহুল। তবে গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রা অনেক সস্তা।

১৪. আয়ারল্যান্ড- ৫৯.৫৬ : ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের প্রচুর সংখ্যক ব্রিটিশ নাগরিক আয়ার‌ল্যান্ডে পাড়ি জমানোর আবেদন করেন। কিন্তু তারা নিজেদের চেয়ে আরো বেশি ব্যয়বহুল একটি দেশে গিয়েই পড়বে।

১৩. ডেনমার্ক- ৬০.০১ : ব্যক্তিগত পর্যায়ে ডেনমার্ক ইউরোপের সবচেয়ে ঋণগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। দেশটির প্রতিটি ঘরের ঋণ আছে তাদের আয়ের ২৬৫%। এর কারণ সম্ভবত দেশটির উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়।

১২. অস্ট্রেলিয়া- ৬২.৩৯ : দেশটির সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্য লোহা ছাড়া জীবন-যাপনের বেশিরভাগ জিনিসই আমদানি করতে হয়। আর এ কারণেই দেশটির জীবনযাত্রার ব্যয় এত বেশি।

১১. ইএস ভার্জিন আইল্যান্ড- ৬২.৫৬ : দেশটি দেখতে সুন্দর হলেও ব্যয়বহুল। এটি এর মূলরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি ব্যয়বহুল।

১০. লুক্সেমবার্গ- ৬৪.১৮ : বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি এই দেশের জীবনযাত্রাও বেশ ব্যয়বহুল।

৯. কাতার- ৬৮.০৬ : দেশটি বিদেশ থেকে উচ্চ বেতনে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী আমদানি করে। কিন্তু জীবন-যাপন ব্যয়বহুল হওয়ায় প্রবাসী কর্মীরা নিজ দেশে খুব বেশি টাকা নিয়ে যেতে পারেন না।

৮. সংযুক্ত আরব আমিরাত- ৬৮.৩৯ : ধনী এবং বিখ্যাতদের আবাসস্থল হিসেবে খ্যাত দেশটির দুবাই এবং আবুধাবির মতো শহরগুলো ব্যয়বহুলতার জন্য কুখ্যাত।

৭. বাহামা- ৭৩.৬৩ : অনেক দ্বীপরাষ্ট্রের মতো বাহামাও মুলত আমদানি নির্ভর। ফলে এখানকার জীবনযাত্রাও অনেক ব্যয়বহুল।

৬. নরওয়ে- ৭৪.৪৭ : স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলো কুখ্যাতরকমভাবে ব্যয়বহুল। নরওয়েও তার ব্যতিক্রম নয়। দেশটিতে গড়পড়তা এক বেডরুমের একটি অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক ভাড়া ৯২ হাজার ১৬৯ টাকা!

৫. সিঙ্গাপুর- ৭৬.৫৭ : দেশটিতে এক পাঁইট বিয়ারের দাম পড়ে ৮৫০ টাকা।

৪. আইসল্যান্ড- ৮০.৪৭ : ইউরোপের মূল ভুমি থেকে বিচ্ছিন্ন এবং খুব কম পরিমাণ উর্বর জমির দেশটি মূলত আমদানিনির্ভর। ফলে জীবনযাত্রার ব্যায়ও অনেক বেশি।

৩. হংকং- ৮১.৯৩ : হংকংও ব্যয়বহুলতার জন্য কুখ্যাত। এর অ্যাপার্টমেন্টগুলো একই সঙ্গে ক্ষুদ্র এবং ব্যয়বহুল।

২. সুইজারল্যান্ড- ৯০.৬৮ : বসবাসের জন্য বিশ্বের সেরা স্থানগুলোর একটি সুইজারল্যান্ড। অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিষ্কার আবহাওয়ার জন্য বিখ্যাত দেশটি। কিন্তু দেশটি ইউরোপের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ।

১. বারমুডা- ১২৬.৩৪ : আটলান্টিক মহাসাগরের এই করস্বর্গটি দাপ্তরিকভাবে বিশ্বের সবেচেয়ে ব্যয়বহুল জাতি। এর রাজধানী শহর হ্যামিলটন এই গ্রহের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নিঃসঙ্গ শহর।