টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে রাজধানীবাসী

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রাজধানীবাসী। ঝাপটা হাওয়ার সঙ্গে অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরছে বুধবার সকাল থেকেই। এতে ঘর থেকে বের হওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে। আর যারা বের হয়েছেন যানবাহন সংকট ও রাস্তায় জমে থাকা পানিতে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

কুড়িল থেকে কাকরাইল, মালিবাগ থেকে মহাখালী, শেওড়াপাড়া থেকে মিরপুর গোলচক্কর, সদরঘাট থেকে গুলিস্তান, মোহাম্মদপুর থেকে জিগাতলা ও ফার্মগেট থেকে সাইন্স ল্যাবরেটরি রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা যানজটে নাকাল হচ্ছেন।

যানজটের পাশাপাশি রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অপ্রতুল। গাড়ি না পাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে অফিস, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষের। গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। বৃষ্টি ভোগান্তিতে পড়েছেন দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরাও। সকালে অনেক শ্রমিককে মোহম্মদপুর টাউনহল, শিয়া মসজিদ ও জিগাতলা এলাকায় অলসভাবে বসে থাকতে দেখা গেছে। নুন আনতে পান্তা ফুরনো এসব মানুষদের অনেকেই অসহায়ভাবে কাকাভেজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

এছাড়া, মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। নিচু এলাকার অলিগলি পানিতে থইথই করছে। অনেক জায়গায় বৃষ্টির সঙ্গে নর্দমার পানি মিশে একাকার। আর যানবাহন না থাকায় বাসের জন্য যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। কোথাও রাস্তায় পানি জমে গর্তগুলো আড়াল হওয়ায় পথচারীদের দুর্ঘটনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

ফুটপাত আর সড়কের পার্থক্য বোঝার কোনো উপায় নেই। এদিকে, নগরীর অধিকাংশ সড়কের পাশে সিটি করপোরেশনের ড্রেন ও ওয়াসার পানির সংযোগ লাইন নির্মাণের জন্য রাস্তা কাটাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কাজ চলায় খোঁড়া গর্তে পানি জমে সড়কের সঙ্গে সমান হয়ে গেছে। এসব গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে- দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে একথা বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পরবর্তী ৭২ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুরুর দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপরূপে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।