তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের এক বছর

বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানচেষ্টার বর্ষপূর্তি আজ। ২০১৬ সালের এই দিনে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে প্রাণ হারান অন্তত ২৬০ জন ও আহত হন ২১৯৬ জন।

তুর্কি সেনাবাহিনীর একটি অংশ প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে অভ্যুত্থানচেষ্টা চালায়; যদিও সে প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়।

ব্যর্থ ওই অভ্যুত্থানচেষ্টার এক বছর পূর্তিতে দেশটিতে র্যা লি ও সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ইস্তাম্বুলের রাস্তায় বড় বড় বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।

অভ্যুত্থানের দিন বিদেশ সফর থেকে দেশে ফিরছিলেন এরদোয়ান। কার্যত দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিতে যাওয়া অভ্যুত্থানকারীদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়তে উড়োজাহাজে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একটি ভিডিওবার্তা পাঠান তিনি। এতে জনতা রাস্তায় নেমে এলে ব্যর্থ হয় অভ্যত্থান।

এদিকে, ওই ঘটনার পর তুরস্কের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১৫ হাজার কর্মীকে অব্যাহতি দেয় এরদোয়ান সরকার। ব্যর্থ ওই অভ্যুত্থানের এক বছর প্রাক্কালেও সে ধারা বলবৎ রয়েছে। সেইসঙ্গে এ সময়ে অন্তত ৫০ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে।

তবে এ নিয়ে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করছে এরদোয়ান প্রশাসন; অভ্যুত্থান সমর্থকদের শিকড় উপড়ে ফেলতেই এটা করা হচ্ছে বলে তাদের যুক্তি।

ওই অভ্যুত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত বিরোধী দলীয় ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে দায়ী করেন এরদোয়ান। কিন্তু অভ্যুত্থানের সঙ্গে কোনো রকমের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন গুলেন।

এদিকে, ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগ এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে বিশাল পদযাত্রা সমাবেশ করে বিরোধী দল। সিএইচপি দলের প্রধান কামাল খেলেচদারওলো ওই পদযাত্রা থেকে অভ্যুত্থান চেষ্টার নিন্দা করলেও, এরদোয়ান সরকারের পদক্ষেপ ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থান’ ঘটাচ্ছেও বলেও অভিযোগ করেন।

তবে বিরোধী নেতার অভিযোগ খণ্ডন করে এ পদযাত্রাকারীদের সন্ত্রাসবাদের সমর্থক হিসেবে অভিহিত করেন এরদোয়ান।

অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার ঘটনাকে নিজেদের বিজয় ও তুরস্কের পুনর্জন্ম হিসেবে দেখছেন এরদোয়ান ও তার সমর্থকরা। তবে এটি শেষ পর্যন্ত তুরস্ককে আরও বিভক্তির দিকে ঠেলে দেবে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।