ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের প্রথম পরীক্ষা আয়ারল্যান্ড

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিসংখ্যান দেখলে অনেককেই হতাশ হতে হবে। সর্বশেষ আট ম্যাচে বাংলাদেশের জয় কেবলমাত্র ২ ম্যাচে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের ৩ ম্যাচের মধ্যে পরাজয় ২টিতে। একটিতে জয়। এরপর নিউজিল্যান্ড সিরিজে তিন ম্যাচেই পরাজয়। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের সিরিজের ১টিতে জয়, আরেকটিতে পরাজয় এবং একটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত।

এমনই এক পরিস্থিতিতে দুটি বড় লক্ষ্য সামনে রেখে আগামীকাল (১২ মে, শুক্রবার) থেকে বাংলাদেশ শুরু করতে যাচ্ছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। যেখানে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিকদের সঙ্গেই ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে টিম বাংলাদেশ। নিষেধাজ্ঞার কারণে মাশরাফি খেলতে পারবেন না। সুতরাং, টাইগারদের নেতৃত্ব দেবেন সাকিব আল হাসান।

একদিন বিরতি দিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। যে দুটি বড় লক্ষ্যকে সামনে রেখে টিম বাংলাদেশ মাঠে নামছে, তার একটি আগামী (২০১৯) বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ তৈরি করা এবং জুনের ১ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল প্রস্তুতি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কেমন খেলবে বাংলাদেশ, তার একটি ধারণা এই সিরিজেই পাওয়া যাবে।

ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রতিটি দল দু’বার করে পরস্পরের মুখোমুখি হবে। সে হিসেবে বাংলাদেশ ম্যাচ পাচ্ছে চারটি। এর মধ্যে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে উভয় ম্যাচ এবং নিউজিল্যান্ডকে যদি অন্তত একটি ম্যাচেও হারাতে পারে টাইগাররা, তাহলে আইসিসি র্যাংকিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে ৬ নম্বর স্থানে উঠে যাবে মাশরাফি অ্যান্ড কোং। একই সঙ্গে ২০১৯ বিশ্বকাপও প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের।

এ লক্ষ্যটাইকেই সামনে রেখে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ শিবির। ২৬ এপ্রিল দেশ থেকে লন্ডনে উড়ে গিয়েছিল মাশরাফিরা। সাসেক্সে ১০ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প, দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে টিম বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিতেই অসাধারণ খেলেছে টাইগাররা। এরপর ৫ মে আয়ারল্যান্ড চলে আসে তামিম-সাকিব-সাব্বিরররা।

ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে ১টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। বেলফাস্টের স্টরমন্ট ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ৩৯৪ রানের বিশাল স্কোর। সাব্বির হাঁকান সেঞ্চুরি। তামিম খেলেন ৮৬ রানের ইনিংস। জবাবে ১৯৫ রানেই অলআউট আয়ারল্যান্ড উলভস। বাংলাদেশ জিতলো ১৯৯ রানের বিশাল ব্যবধানে।

দারুণ প্রস্তুতি দিয়ে সিরিজ শুরু করার পর স্বাভাবিকভাবেই টিম বাংলাদেশ উজ্জীবিতই থাকার কথা। ব্যাটসম্যানরা রানে রয়েছেন। বোলাররা রয়েছেন ফর্মে। তবে আসল লড়াই শুরু করার পরই বোঝা যাবে আসলে বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বাংলাদেশের সঠিক কম্বিনেশন তৈরি করাও এই ত্রিদেশীয় সিরিজের একটি উদ্দেশ্য। এখান থেকেই সেরা একাদশ বাছাই করে নেবেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

ডাবলিনের দ্য ভিলেজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে চারটায় শুরু হবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি। এই মাঠে এর আগে আর কখনও খেলেনি বাংলাদেশ। এবারই প্রথম। উইকেটের যে চরিত্র, তাতে বোঝাই যাচ্ছে খুব গতিময় এবং বাউন্সি হওয়ার সম্ভাবনা রযেছে। সুতরাং, এই উইকেটে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ডকে হারানো হবে বেশ কঠিন। সবচেয়ে বড় কথা আইরিশরা পাবে হোম অ্যাডভান্টেজ। তাদের সুযোগ কম থাকলেও চমকে দেওয়ার মত সামর্থ্য আছে। দলে রয়েছে বেশি কিছু তারকা খেলোয়াড়ও।

সর্বশেষ বাংলাদেশ আইরিশদের মুখোমুখি হয়েছিল ২০১১ বিশ্বকাপে। সেবার বাংলাদেশ জিতেছিল ২৭ রানে। ওই ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন তামিম ইকবাল। এরপর গত ৬ বছর আর কখনও মুখোমুখি হয়নি দুই দল। এই অর্ধযুগে নদীগুলো দিয়ে কত পানি গড়িয়ে গেছে। কত পরিবর্তন এসেছে দুটি দলেই। অভিজ্ঞতা বেড়েছে, যেমন বাংলাদেশের তেমনি আয়ারল্যান্ডেরও। সুতরাং, নতুন এক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশকে।