দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া নিজের ছাত্রীর প্রেমে হাবুডুবু খান কাসেম

যার সঙ্গে গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রবীণ ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবুবাকারের তার সঙ্গে বিয়ে হয়নি। তবে এখনও সাবেক প্রেমিকার খোঁজ রাখেন তিনি।

তার প্রেমিকার নাম রহিমা। এখনও বেঁচে আছেন তিনি। রহিমাকে নিয়ে একটি উপন্যাসও লেখেন কাসেম। যার নাম দেন ‘বিলম্বিত বাসর’।

রোববার বিকালে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান তিনি।

তিনি জানান, দেবদাস উপন্যাস পড়ে তিন দিন না খেয়ে কান্নাকাটি করেছেন। পরে তার মা তাকে বুঝান।

কাসেম জানান, যখন তিনি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন রহিমা। তখনই রহিমার প্রেমে পড়েন কাসেম। রহিমা ছিল কাসেমের বন্ধুর বোন। তবে রহিমা যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো তখন তার বিয়ে ঠিক হয়। তবে রহিমার বিয়ের আগেই কাসেমের বাবা-মা কাসেমকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তবে তার সঙ্গে যার বিয়ে হয় তিনি ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী।

বিয়ের ত্রিশ বছর পর রহিমার সঙ্গে দেখা হয় কাসেমের। সাক্ষাতে কখনো তার সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। কুশল বিনিময়ও হয়নি। কারণ তাকে দেখলে নিজের মধ্যে কষ্ট কাজ করে কাসেমের।

কাসেম জানান, প্রথম দিকে প্রকাশকরা তার বই প্রকাশ করতে চাইতো না। ১৯৭৮ সালে তার প্রথম বই ‘ফুটন্ত গোলাপ’ প্রকাশ হয়। আমার বইয়ে খারাপটি লিখেছি, আবার খারাপের মলমও দিয়েছি। আমি অশালীন কিছু লিখি না।

ভক্তদের সম্পর্কে কাসেম জানান, অনেক নারী ভক্ত রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিল। এখনও অনেক পাঠক মোবাইলে যোগাযোগ করেন।

তিনি আরও জানান, সিলেটের এক নারী পাঠক তাকে ভালোবেসে তার বাসায় চলে আসেন। এতে কাসেমের পরিবারের লোকজন অনেক রাগারাগি করেন। তখন কাসেমের ঘরে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে ছিল। অনেক বোঝানোর পরও তিনি ওই মেয়েকে বোঝাতে পারেননি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশী প্রবীণ ঔপন্যাসিক কাসেম বিন আবুবাকার। তার উপন্যাসগুলো হাজার হাজার কপি বিক্রি হয়ে থাকে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও তাকে নিয়ে জোরালো বিতর্ক আছে।

অনেকের দাবি, কাসেম বিন আবুবাকার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক।

তবে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে বরাবরই আলোচনার বাইরে ছিলেন কাসেম বিন আবুবাকার। ঔপন্যাসিক হিসেবেও সাহিত্য সমাজে ‘স্বীকৃতি ও সমাদর’ পাননি তিনি।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি কাসেম বিন আবুবাকারকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হন তিনি।

যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইয়াহু নিউজ, মধ্যপ্রাচ্যের আরব নিউজ, মালয়েশিয়ার দ্যা স্টার ও মালয়মেইল, পাকিস্তানের দ্য ডন, ফ্রান্সের ফ্রান্স টুয়েন্টি ফোর ও রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল, হাঙ্গেরির হাঙ্গেরি টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে কাসেমকে নিয়ে ওই প্রতিবেদন ছেপেছে।