ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও সরকার বাধা দিচ্ছে : ফখরুল

২০ দলীয় জোটের শরিকদের ইফতার অনুষ্ঠানে সরকার বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সারাদেশে ইফতারের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকার বাধা দিচ্ছে। শুধু বাধাই দিচ্ছে না, এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ভোলার তমিজউদ্দিনে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠানে বাধা দেয়া হয়েছে। সেখানে মাইক ব্যবহার করে দেয়া হয়নি। সেখান থেকে নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি হোটেলে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলাম, তারা বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে আগামী ১২ তারিখে ইফতারের আয়োজন করেছিল, পুলিশ তা বন্ধ করে দিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘একদিকে সরকার আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দিচ্ছে না, অন্যদিকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারা একদিকে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে, অন্যদিকে তারা বিশেষ বিশেষ ধর্ম প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করছে। এর থেকে এই সরকারের চরিত্র আরও বেশি করে উন্মোচিত হচ্ছে। সরকার যে মাঝে মাঝে ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলে, ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত না দেয়ার কথা বলে, সেটা যে নিছক প্রতারণা, এই ঘটনাগুলো থেকে আরও পরিষ্কার হয়ে যায়।’

সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘হিন্দু ভাইদের মন্দির বিনষ্ট করা হয়েছে, তাদের জায়গা-জমি দখল করা হয়েছে। আমাদের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন্দির ধ্বংস করা হয়েছে। আমাদের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের ওপর অত্যাচার হয়েছে; কয়েকদিন আগে রাঙামাটিতে কী ঘটনা ঘটেছে তা সবাই দেখেছেন।’

বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত রাখার চেষ্টা করছে সরকার। এত মামলা দিয়েছে যে, তা সহ্যের সীমা অতিক্রম করে গেছে। এই সরকার নির্বাচনকে এককভাবে করার জন্যে, বিরোধী দলকে কোনো সুযোগ না দেয়ার জন্যে বিভিন্ন কায়দায় কাজ করছে।’

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, নির্বাচন অবশ্যই লেভেল প্লেইং ফিল্ডে হতে হবে, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। আমরা আশা করব, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, দাম্ভিকতা ছেড়ে দিয়ে সহনশীলতাকে রেখে সব মানুষের চিন্তা-ভাবনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে একটি নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, মুসলিম লীগের কাজী আবুল বাশার, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী ও সাংবাদিক উবায়দুর রহমান খান নদভী প্রমুখ।