ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল আতঙ্কে দুই তরুণী!

শঙ্কা আর অপপ্রচার যেন পিছু ছাড়ছে না রাজধানীর বনানীতে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর। অভিযুক্ত সাফাতের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন তারা। এবার ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার আতঙ্ক তাড়া করছে তাদের।

ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আপত্তিকর মন্তব্যসহ ওই ছবি ছড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি চক্র। এতে দুই পরিবারে দেখা দিয়েছে নানা শঙ্কা আর উদ্বেগ।

ওই দুই তরুণীর পরিবারের দাবি, ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজের কথা জানার পর তা মুছে ফেলার জন্য সৌরভ ও পাপ্পু নামের দুজনকে সাফাত, সাদমান ও নাঈমের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে এক তরুণীর ছবিও আপলোড করা হয়েছে। এতে আতঙ্কে আছে ভুক্তভোগীদের পরিবার।

এ ছাড়া ধর্ষণের ভিডিও অন্য কোথাও আছে কি না বা সেখান থেকে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় কি না তা নিয়েও উদ্বিগ্ন দুটি পরিবার। এ নিয়ে এক তরুণীর পরিবারের ভাষ্য, ওই ভিডিওতে আসলে কী আছে তা জানি না। তবে আসামিরা এগুলোর কপি অন্য কারো কাছে জমা রাখতে পারে। না হলে পুলিশ হেফাজতে থেকে ছবি ছড়াবে কিভাবে?

তবে তদন্ত সংস্থা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার বলছে, ফেসবুক থেকে ইতোমধ্যে কয়েকটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট তারা ডিলিট করেছে। বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এদিকে, ভুক্তভোগীদের ছবি ফাঁস করায় সাফাতের বিরুদ্ধে বনানী থানায় আইসিটি আইনে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন দুই তরুণীর একজন।

এদিকে, ভিডিও ফুটেজে ধর্ষণের দৃশ্য আছে কি না এ ব্যাপারে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তাই মুখ খোলেননি। তবে সাফাতের মোবাইল ফোন থেকে দুই তরুণীর সঙ্গে তোলা অনেকগুলো সেলফি জব্দ করা হয়েছে। ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ভিডিও ফুটেজ ও ছবি উদ্ধারের বিষয়টি মামলার পরই গণমাধ্যমকে জানাবেন তারা।

শুক্রবার (১৯ মে) তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছিল, দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের মুঠোফোন থেকেই ভিডিওচিত্রটি পাওয়া যায়। একদিন পরই ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছে পুলিশ।

শনিবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীর ছবি যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যুগ্ম কমিশনার বলেন, যেকোনো মাধ্যমে ধর্ষিতার ছবি ছড়িয়ে দেওয়া আইনের পরিপন্থি। বিষয়টি পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট খতিয়ে দেখছে।

এদিকে, ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনায় কোনো ভিডিও ফুটেজ এখনো পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তবে তারা জানিয়েছে, সেখানে ভিডিও করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। রেইনট্রি হোটেলের সিসি ক্যামেরাতেও এ ধরনের কোনো আলামত মেলেনি।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনেও ওই ঘটনা সম্পর্কিত কোনো ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তারপরও তাদের মোবাইল ফোন ও অন্য আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা করে দেখা হবে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য রয়েছে কি না।