নায়ককে দেখতে ছুটে যাচ্ছেন তার নায়িকারা

আর নেই নায়করাজ রাজ্জাক। সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন তিনি। তার মৃত্যুর খবর যেন মানতেই চাইছেন না কেউ। যার সঙ্গেই যোগাযোগ করা হচ্ছে সেই পাল্টা প্রশ্ন করছেন খবরটা সত্যি তো? নাকি গুজব।

রাজ্জাকের নায়ক হিসেবে প্রথম ছবি ‘বেহুলা’। জহির রায়হান পরিচালিত সেই ছবিতে তার নায়িকা ছিলেন সুচন্দা। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কণ্ঠ বেশ ভারী শোনা গেল। জানতে চাইলেন, ‘বিশ্বাসই করতে পারছি না রাজ্জাক সাহেব নেই। প্রথমবার শুনে ভাবছি গুজব। এমনটা তো আগেও হয়েছে। প্লিজ, বলুন যে এটাও গুজব।’

তার মৃত্যুর খবরটি সত্য প্রমাণ করতেই তিনি কেঁদে উঠলেন। বললেন, ‘বিশ্বাসই করতে পারছি না। তার মতো শিল্পীর চলে যাওয়া চলচ্চিত্রের এই দুর্দিনে দারুণ ক্ষতি।’ সুচন্দা আরও বলেন, ‘আমি সৌভাগ্যবান, নায়করাজের সঙ্গে কাজ করার অনেক অভিজ্ঞতা আছে আমার। ‘বেহুলা’ তো অনেক স্মৃতির জায়গা। আর ‘জীবন থেকে নেয়া’ আমাদের দুজনের ক্যারিয়ারেই অনবদ্য ছবি। উনার জন্য দোয়া করবেন।’ কথা শেষ করেই হাসপাতালে যাবেন বলে কল কেটে দিলেন তিনি।

নায়করাজের আরেক নায়িকা কবরী। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে অসংখ্য জনপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি। রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কবরী। তিনি বলেন, ‘কীভাবে বিশ্বাস করব আমার নায়ক রাজ্জাক আর নেই। খবরটা শুনে মনে হচ্ছে শরীরটা অবশ হয়ে গেছে। যাচ্ছি হাসপাতালে। একটা সময় তার সঙ্গেই দিনগুলো কেটে যেত। আর সময়ের নিষ্ঠুরতায় কতদিন দেখা হয় না তার সঙ্গে। কিন্তু এভাবে দেখা করতে ছুটে যেতে হবে ভাবতেও পারছি না।’

রাজ্জাকের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন নায়িকা রোজিনাও। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে জানা গেল উত্তরা থেকে তিনিও ছুটছেন গুলশানে ২-এ অবস্থিত ইউনাইটেড হাসপাতালে। কল রিসিভ করেই কেঁদে উঠলেন। বললেন, ‘রাজ্জাক ভাইয়ের মৃত্যুর অনেক গুজব ছড়িয়েছে আগে। তাই বিশ্বাসই হচ্ছিল না তিনি নেই। এটা মেনে নেয়া কষ্টের যে আমাদের অভিভাবক চলে গেছেন। তিনি ছিলেন ঢাকাই ছবির বটগাছ। তার বিকল্প কেউ হবে না।’

রাজ্জাকের ৪০টি ছবির নায়িকা ববিতা। খবর শুনে নিজেও অসুস্থ হয়ে গেছেন। জাগো নিউজকে বললেন, ‘এটা কী করে সম্ভব! কিছুদিন আগেও রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো। আমরা মজা করলাম। আর আজ শুনতে হলো তিনি নেই। কী অদ্ভুত মানুষের জীবন।’

নায়করাজকে দেখতে তার বাসায় যাচ্ছেন ববিতা। তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগেই কথা হলো আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে। উনি জানান, হাসপাতালে প্রচুর ভিড়। ওখানে যাওয়া যাবে না। তাই বাসায় যাচ্ছি আমি। এই মুহূর্তে রাজ্জাক ভাইয়ের স্ত্রীর পাশে আমাদের থাকা উচিত। সবাইকে বলব, আমার ভাই, আমার নায়ক, রাজ্জাকের জন্য দোয়া করবেন। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত দান করেন।’