পরিবহন না পেয়ে ক্ষোভে গাবতলীর রাস্তায় যাত্রীদের বিক্ষোভ

স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দে মিলতে রাজধানী ছাড়ছেন মানুষ। টিকিট না পাওয়া ও নিকট দূরত্বের যাত্রীরা ভিড় করেছেন গাবতলীতে। তবে বিপত্তি দেখা দিয়েছে গাবতলীতে আসার পর। কাঙ্ক্ষিত রুটের পরিবহন কিংবা টিকিট না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। এক পর্যায়ে এ সমস্যা সমাধানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা।

শনিবার সকালে রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে।

রাজধানীর অন্যতম বড় ও ব্যস্ততম পরিবহন হাব গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল হয়ে বাড়ি যেতে হয় উত্তরবঙ্গ ছাড়াও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে। একই রুটের বাসে উঠতে হয় সিরাজগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, ঝিনাইদহের যাত্রীদেরও। এদের অনেকেই অগ্রিম টিকিট কাটতে পারেননি।

অধিকাংশ রুটের বাসের টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে টিকেট না কাটা এসব রুটের যাত্রীরা। শুধু তাই নয়, বিপাকে পড়েছেন কম দূরত্বের মানিকগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জের যাত্রীরাও।

বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে ঘর ফেরত মানুষের উপচে পড়া ভিড়। মহাসড়কে খুব বেশি যানজট না থাকায় স্বস্তি মিললেও পরিবহন সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব সাধারণ মানুষ। টার্মিনালে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি আছে। এগুলো ঢাকা ফিরলেই যাত্রা শুরু হবে।

এদিকে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে কয়েক`শ যাত্রী পরিবহন না পেয়ে রাস্তা অবরোধ করে ভোগান্তি বন্ধে বিক্ষোভ করেছেন। অনেকে অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে বাসের ছাদে সওয়ার হয়েই ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন।

ভোগান্তির শিকার বগুড়াগামী যাত্রী আব্দুস সালাম বলেন, স্ত্রী ও কন্যা নিয়ে গাবতলীতে আসছি সকাল ৭টায়। কিন্তু কোনো কাউন্টারে টিকিট নেই, বাসেরও কোনো খবর নেই। বাসের সিডিউলও ঠিক নেই। ঠিক কোন বাসে উঠতে পারবো, তাও সঠিক অনুমান করা যাচ্ছে না। সব মিলে বিপদেই অাছি।

`দেড় ঘণ্টা ধরে আমার মতো অসংখ্য যাত্রী গাবতলী কল্যাণপুরে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু পরিবহন কর্তৃপক্ষের সে দিকে কোনো কান নেই। লোকাল কিংবা সিডিউল যে কোনো বাসে উঠতে পারলেই গন্তব্যে যেতে পারি। কিন্তু পরিবহনই মিলছে না। বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে যাত্রীরা,` সালামের সঙ্গে যোগ করেন সিরাজগঞ্জের যাত্রী রিয়াজুল ইসলাম।

চাহিদা বেড়েছে লোকাল বাসের :

এদিকে অন্যান্য সময় লোকাল বাসের কদর খুব একটা না পেলেও পরিবহন না পাওয়া যাত্রীদের কাছে চাহিদা বেড়েছে লোকাল ও নিকট দূরবর্তী সিটিং সার্ভিস বাসের। রাজধানীর গাবতলী থেকে হানিফ, শ্যামলী, দেশ ট্রাভেলসের মতো বাসে টিকিট পাননি তারা এক রকম বাধ্য হয়েই লোকাল বাসে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন।

ঢাকার নিকটবর্তী জেলা মানিকগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল রুটের মানুষ গাবতলী থেকে পাবনা এক্সপ্রেস, হক, রোজিনা, সোনালী, কেয়া, হাসনাহেনা, আগমনী ছাড়াও রাজধানীতে চলাচলকারী বিভিন্ন লোকাল ও সিটিং সার্ভিসের বাস দিয়ে রওনা দিচ্ছেন বাড়ির পথে। রাজধানীর লোকাল বাসগুলোই সিটিং হয়ে চুক্তিভিত্তিতে যাত্রী পরিবহন করছে বিভিন্ন জেলায়।

কল্যাণপুরে কেয়া পরিবহনের ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে চলাচলকারী ২ ডজন বাস ফিরে এসেছে। তবে এখনও যাত্রীরা এসে কাউন্টারে ভিড় করছেন। তবে তাদের টিকিট দেয়া সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার আলমগীর কবির বলেন, পরিবহনের টিকিট না পাওয়া অনেক যাত্রী গন্তব্যে যেতে পারছেন না। টিকিট চাইলেও দিতে পারছি না। নাটোর রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা রুট ও নিকট দূরত্বের যাত্রীই বেশি।

একই কথা জানালেন হানিফ পরিবহনের সহকারী ম্যানেজার গোপাল বাবুও।