পারিবারিক বিরোধে ভাতিজা-ভাতিজিকে পুড়িয়ে হত্যা

পারিবারিক বিরোধের জেরে ঘরে তালা দিয়ে নিজের ভাতিজা আর ভাতিজিকে পুড়িয়ে মেরেছেন চাচা। তাদের দগ্ধ মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের ঘাটালের সুন্দরপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজার’র।
প্রতিবেশীরা জানায়, প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোতে যান ফাতেমা বিবি (৪৮)। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে শুয়েছিলেন তিনি, গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ঠিক ওই সময় ফাতেমার দেবর কাজি ইসমাইল কয়েকজন লোক নিয়ে এসে জানলা দিয়ে ঘরের ভেতর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ঘুম ভাঙতেই ফাতেমা বিবি দেখেন গোটা ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ঘরের ভেতর থেকেই চিত্কার করে পড়শিদের ডাকাডাকি শুরু করেন তিনি। দৌড়ে দরজার দিকে গিয়েও চেষ্টা করে সেটি খুলতে পারেননি।

ততক্ষণে আগুনে ঝলসে যায় তার ছেলে রাজীব কাজি এবং মেয়ে রেশমী খাতুন। অগ্নিদগ্ধ হন ফাতেমা নিজেও। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় রেশমী ও রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ফাতেমা।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে। ঘাটালের কাজিরহাট সংলগ্ন সুন্দরপুর গ্রামে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন ফতেমা বিবি। তার স্বামী কাজি হাসেম আলি কর্মসূত্রে থাকেন মুম্বাইয়ে।

প্রতিবাশীরা জানান, হাসেমের বাড়ির পাশেই থাকতেন তার ভাই ইসমাইল। দীর্ঘদিন ধরেই দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। এ নিয়ে গ্রামে দু’বার সালিশি বৈঠক হলে কোনো সুরাহা হয়নি।

তখন থেকেই প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন ইসমাইল। এমনকি হাসেম ও তার স্ত্রীকে প্রাণে মারারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। ওই দিন রাতে হামলা চালানোর আগে ফাতেমার ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয়া হয়। এমনকি সাহায্যের জন্য যাতে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে আসতে না পারেন, সেজন্য ওই বাড়িতেও তালা লাগিয়ে দেন ইসমাইল।

আগুন লাগিয়েই চম্পট দেন ইসমাইল। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসী। ইসমাইলের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায় তারা। বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন গ্রামবাসী।
এঘটনায় পুলিশ ইসমাইলের মা ও বোনকে আটক করেছে। ইসমাইলের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।