পূজায় ১৬০০ টাকার ডিউটিতে ৫০০ টাকা অগ্রিম ঘুষ!

খুলনায় পাঁচ দিন শারদীয়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে ডিউটি করার আগেই ১৬শ’ টাকার ডিউটিতে ৫০০ টাকা অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘুষের বিনিময়ে প্রতি মণ্ডপে আনসার সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামে আনসার কমান্ডাররা এ টাকা সংগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী আনসার সদস্যরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

কর্মকর্তারাও এ ধরনের অভিযোগ শুনেছেন বলে স্বীকার করলেও বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ উৎসব দুর্গাপূজার নিরাপত্তার জন্য লাঠি হাতে আনসার সদস্যরা একটানা ৫ দিন বিভিন্ন মণ্ডপে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ জন্য কমান্ডাররা বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্যদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আর এ নিয়োগেই হয়েছে অর্থ বাণিজ্য।

সূত্র জানিয়েছে, দিঘলিয়া উপজেলায় ৫৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার ডিউটির জন্য নারী-পুরুষ মিলে ২৯৬ জন আনসার সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়োগ পেতে জনপ্রতি ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়েছে। আর যারা চাহিদামত টাকা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পাওয়া রোকসানা বেগম, রাজিয়া বেগম, নাসরিন বেগম, ফিরোজা বেগম, ফরিদা বেগম ও লাভলু শেখসহ একাধিক আনসার সদস্য এ বিষয়ে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, উপজেলা আনসার ইনচার্জ নূরুন্নেছা খানম এবং আনসার কমান্ডাররা নিয়োগ পাওয়ার শর্ত হিসেবে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েছেন।

তবে উপজেলা আনসার ইনচার্জ নূরুন্নেছা খানম নিজে কারও কাছ থেকে টাকা নেননি দাবি করে বলেন, ‘আনসার কমান্ডার ইলিয়াছ শরীফসহ কয়েকজন কমান্ডার টাকা নিয়েছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’

জেলা আনসার কমান্ডেন্ট শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘নিয়োগ পেতে অর্থ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, এবার খুলনার ৯৪৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়। এরমধ্যে মহানগরী এলাকায় ২২১টি, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৯৪টি, পাইকগাছা উপজেলায় ১৪৩টি, বটিয়াঘাটা উপজেলায় ১০৬টি, তেরখাদা উপজেলায় ৯৪টি, দাকোপ ও রূপসা উপজেলায় ৭৩টি করে, দিঘলিয়া উপজেলায় ৫৯টি, কয়রা উপজেলায় ৫০টি এবং ফুলতলা উপজেলায় ৩০টি। প্রায় ৬ হাজার আনসার সদস্য এসব মণ্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।