প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনায় আ.লীগের সাংসদ

প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা কোনো যুক্তি হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তারই দলের সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কুমিল্লার এই সংসদ সদস্য বলেছেন, ‘প্রশ্ন ফাঁস আগে হয়েছে, এখনও হচ্ছে- এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না।’

রবিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে কথা বলেন মতিন খসরু।

গত কয়েক বছর ধরেই প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। তবে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ এর প্রশ্ন যে মাত্রায় ফাঁস হয়েছে, সেটা এর আগে দেখা যায়নি।

এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিত চাপে আছেন। তার পদত্যাগ, নয়ত বরখাস্তের দাবিও উঠেছে সংসদে।

তবে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গণভবনে করা সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষেই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন তিনি ‘দেখুন প্রশ্নপত্র ফাঁস, এটা কোনো নতুন কিছু না, এটা কিন্তু সব সময় যুগ যুগ ধরেই চলে এবং কখনও প্রচার হয়, কখনও প্রচার হয় না, এটা হল বাস্তবতা।’

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মন্ত্রী কি নিজে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে গেছে? বা সচিব করেছে? বা যারা শিক্ষক তারা করেছে? হ্যাঁ, কিছু আছে যারা ক্যামেরা-ট্যামেরায় ছড়িয়ে দিচ্ছে, সেমন কিছু আছে।’

১৯ ফেব্রুয়ারি গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশ্ন আগেও ফাঁস হতো

‘এটা নিয়ে একটা সুর তুলে একবার মন্ত্রীকে দায়ী, একবার সচিবকে দায়ী একবার সরকাকে দায়ী, আমরা কি নিজেরা এভাবে করতে যাচ্ছি?’

‘এ জন্য মন্ত্রীকে গালি দিতে হবে বা তাকে রিজাইন করতে হবে। সচিব কী বলল, তাকে চলে যেতে হবে। সচিব আর মন্ত্রী তো প্রশ্ন ফাঁস করে আসেনাই।’

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আগেও প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে-এমন যুক্তি নিয়েই কথা উঠেছে বেশি।

আওয়ামী লীগের সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু প্রধানমন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করেই বলেন, ‘আগে হয়েছে- এটা কি কোনো যুক্তি হল? আগে মানুষ অন্যায় করেছে, চুরি করেছে বলে আমরাও করব?’

শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমাদের সাহায্য নেন। সবাইকে ডাকেন। কেন প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করা যাবে না? প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে- আর কোনো দিন এটা শুনতে চাই না।’

পরোক্ষভাবে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগও চান মতিন খসরু। বলেন, ‘শেখ হাসিনার এত অর্জনকে দু-একটি অপকর্ম দিয়ে ম্লান করে দেবেন এটা হতে পারে না। যারা পারেন না হি মাস্ট রিজাইন। আওয়ামী লীগে লোকের অভাব নেই। আপনাদের দুই-একজনের ব্যর্থতার দায় আওয়ামী লীগ নেবে না। শেখ হাসিনা নেবে না। আমরা নেব না।’