প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান ড. কামাল

কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে হওয়া আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের ঈদের আগে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ চেয়েছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে শুক্রবার জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক ও কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ ও গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি’ শিরোনামে আয়োজিত সংহতি সভায় সভাপতির বক্তব্যে ড. কামাল এ কথা বলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ৯৭ শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উদারতা দেখাবেন উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, ‘ছাত্ররা কী চায়! তারা সংস্কার চেয়েছে। সংস্কার একটি ভালো শব্দ। এর মানে হচ্ছে আরও কী করে ভালো করা যায়। বিশ্বের সব দেশেই সংস্কার একটি ভালো শব্দ। ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে গেলে তিনিও ক্ষমা করে দিতেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছে এর চেয়ে কম আশা করি না।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, ‘আপনি অবশ্যই বিশ্বাস করেন যে আমি আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী। এই ৮১ বছর বয়সে আপনার কাছে আবেদন করতে পারি, ছেলেদের ছেড়ে দেন। এরা যেন নিজেদের বাড়িতে গিয়ে ঈদ করতে পারে। এই উদারতা আপনি দেখাবেন। ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে আবেদন করছি ওদের ছেড়ে দিন।’

নিজের কথাগুলো দেখা করে বলার সুযোগ না পেলে লিখিতভাবে জানাতে চান ড. কামাল। তিনি বলেন, ‘আমাদের কথা লিখিত আকারে পাঠিয়ে দেব।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার বিরোধিতা করার জন্য একদম বসি নাই। আপনি সংবিধান মেনে সফলভাবে শাসন করে একটি অবস্থানে আনতে পারেন। আমরা সংবিধান সম্পর্কেও কিছু কথা বলতে চাই। সংবিধানকে অমান্য করে কোনো ভালো কাজ করা সম্ভব হয় না। কোটা সংস্কার ও সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় স্বার্থ ও জনস্বার্থ বজায় রেখে এর সমাধান সম্ভব।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে হাতুড়ি দিয়ে যে পা ভেঙেছে, তার মানসিক চিকিৎসা করানো দরকার। পাগল না হলে এই কাজ কেউ করতে পারে না। স্বাধীন বাংলাদেশে এটা যেন না ঘটে।

সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ আজ ভয়ানক অসুস্থ। কতটা অসুস্থ সেটা আমরা নিজেরাও বুঝতে পারছি না। না হলে কি একজন সাবেক বিচারপতিকে জুতাপেটা করার কথা বলতে পারেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য!’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সংহতি সভায় আরও বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক নেতা ফজলুর রহমান, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।