প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মাদ্রাসা ছাত্রীর গলায় ছুরিকাঘাত

বাড়ি থেকে মাদ্রসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিদিনের মত সকালে বের হন সুমাইয়া আক্তার (১৬)। গ্রামের পথ ধরেই বই-খাতা নিয়ে একাকী হেটে মাদ্রাসায় যাচ্ছিলো। স্থানীয় সেরার খালের সেতুর এলাকায় পৌঁছলে ঝোঁপের আড়াল থেকে এক যুবক বের হয়ে এসে কিছু বুঝে উঠার আগেই গলায় চালিয়ে দেন ছুরি, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চেতনা হারিয়ে ফেলেন সুমাইয়া। এর মধ্যেই চলে যায় বেশ কিছু সময়। একই পথ ধরে সাইকেলযোগে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন গোসিঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম। এ অবস্থায় কিশোর সিয়াম চিৎকার শুরু করেন। সিয়ামের কান্নার শব্দে আশপাশ হতে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে চিকিৎসার জন্য সুমাইয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পাঁচলটিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার (১৬), পটকা সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির ছাত্রী এবং স্থানীয় পাচলটিয়া গ্রামের মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে।

মাদ্রাসার সহকারি মৌলভী মো. মোবারক হোসেন জানান, রেদোয়ান ও সুমাইয়া তাদের মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণিতে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে রেদোয়ান সহপাঠী সুমাইয়াকে উত্ত্যক্ত করলে তাকে সতর্ক করা হয় এবং পারিবারিক ভাবে শাসন করা হয়। এসব নিয়ে সুমাইয়া কিছুদিন মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে এ ঘটনা একাধিকবার রেদোয়ানের বাবাকেও অবহিত করা হয়। তাদের ধারনা প্রেমঘটিত বিষয় থেকে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

শ্রীপুর থানার ওসি মো. লিয়াকত আলী জানান, প্রেমঘটিত কারণে স্থানীয় মাটিয়াগাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে রেদোয়ান ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। ঘটনায় জড়িতকে আটকের চেষ্টা চলছে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানান, সুমাইয়ার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিন ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের চিহ্ন রয়েছে। তবে সে শঙ্কামুক্ত।

গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার বিষয়টি গলা কাটা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। গুজবে কান দেয়া আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গলা কাটার বিষয়টি নিছক গুজব। তবে কোথাও গলা কাটা সন্দেহে কাউকে আটক করা হলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে হত্যা করা যাবে না।