ফেনসিডিল রেখে দোকানিকে আটকের চেষ্টা, পুলিশকে জনতার ধাওয়া

যশোরের চৌগাছায় দোকানের পাশে ফেনসিডিল রেখে ব্যবসায়ীকে আটকের চেষ্টার ঘটনায় পুলিশের দুই এএসআইকে ধাওয়া দিয়েছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার খড়িঞ্চা বাজারে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিচার দাবি করে সড়কে টায়ার পুড়িয়ে অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী। পরে যশোর ‘ক’ সার্কেলের এডিশনাল এসপি নাইমুর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এরআগে একই এলাকায় ইয়াবা রেখে আটকের চেষ্টায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ধাওয়া দিয়েছিল ব্যবসায়ীরা।

ভুক্তভোগী খড়িঞ্চা গ্রামের চায়ের দোকানদার আবদুর রহমান অভিযোগ করেন, প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার দুপুরে তিনি দোকান বন্ধ করে পুড়াপাড়া বাজারে যান। সেখান থেকে দুপুর ১টার দিকে দোকানের মালামাল নিয়ে ফিরে দেখতে পান চৌগাছা-পুড়াপাড়া সড়কের পাশে খড়িঞ্চা বাজারে অবস্থিত তার চায়ের দোকানের পাশে একটি সাদা মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে আছে। চৌগাছা থানার এএসআই সাজ্জাদ এবং এএসআই মাসুদ তার দোকানের পেছনে কিছু রাখছেন। এ সময় তিনি কে ওখানে, কি রাখছেন বলে চিৎকার করে ওঠেন। চিৎকার শুনে দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বলেন, এই ফেনসিডিল তুই দোকানের পেছনে রেখেছিস। তুই এই ফেনসিডিলের মালিক। এ কথা বলে তারা তাকে আটকের চেষ্টা করেন।’

তিনি প্রতিবাদ করলে পাশ থেকে বাজারে থাকা লোকজন এগিয়ে এসে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় গ্রামের মেম্বার আবদুল মান্নান এসে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ছাড়িয়ে দেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বিচারের দাবিতে স্থানীয় জনতা চৌগাছা-পুড়াপাড়া সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে এবং যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) মারুফ আহমেদ এবং সেকেন্ড অফিসার আকিকুল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর যশোরের এডিশনাল এসপি ‘ক’ সার্কেল নাইমুর রহমান গিয়ে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়ী আবদুর রহমানের সাথে গ্রামের মেম্বার আবদুল মান্নানের বিরোধ ছিল। এজন্য তিনি দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে চায়ের দোকানদারকে ফাঁসাতে চেষ্টা করেছিলেন।

এ বিষয়ে এডিশনাল এসপি ‘ক’ সার্কেল নাইমুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ‘অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। পুলিশের কেউ যদি কোন প্রকার অপকর্মের সাথে জড়িত থাকে অবশ্যই তার বিচার হবে।’

উল্লেখ্য, এর আগে চৌগাছা বাজারের এক দোকানে ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে আটকের চেষ্টা করার সময় জনতার ধাওয়া খেয়ে চৌগাছা থানার তৎকালীন এএসআই সিরাজ ও এক কনস্টেবল পালিয়ে রক্ষা পান।