বনানীর অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ও ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরমান আলীসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি। অভিযুক্ত অপর দুই কর্মকর্তা হলেন, গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মানস কুমার পোদ্দার ও বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন।

প্রসঙ্গত, দ্য রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নিতে বিলম্ব করা, ভুক্তভোগীদের চরিত্র হননের চেষ্টা, হয়রানি, আসামিপক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠে বনানী থানার ওসি ফরমান আলীর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, মামলা করতে গেলে ওসি ফরমান আলী বিষয়টি নিয়ে নানা টালবাহানা করতে থাকেন। ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পরপরই ওসি বলতে থাকেন, ‘তোমরা কী নর্তকী? তোমরা কী হোটেলে গান গাও? সেটা না হলে হোটেলে যাবে কেন? টাকা নেওয়ার জন্য ওদের ফাঁদে ফেলতে চাও?’ এ সময় মোবাইল ফোনে দুই তরুণীর ছবি ধারণ করার আদেশও দেন তিনি।

তবে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশে মামলা গ্রহণ করার পর থেকে দৃশ্য পাল্টে যেতে থাকে। আলোচিত এ ঘটনার মধ্যেই পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পাঁচ দিনের ছুটিতে যান ফরমান আলী।

এসব অভিযোগ তদন্তে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন। অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমানকে প্রধান করে এবং যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় (ক্রাইম) ও যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেনকে সদস্য করে এ কমিটি করা হয়।

রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা নিতে বনানী থানার কোনো গাফিলতি ছিল না বলেই মনে করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। সোমবার দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘তদন্ত শেষে কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে বনানী থানার অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ত্রুটি ছিল। তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আসামিরা সবাই গ্রেফতার হয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন। এখন সাক্ষীদের জেরার কাজ চলবে। তদন্ত শেষ করে দ্রুতই চাঞ্চল্যকর এ মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।’