বন্ধ হতে পারে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বাজেট ১০০ কোটি মার্কিন ডলার কমানোর প্রস্তাব করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে মিশনের এক চতুর্থাংশ খরচ বহন করে দেশটি। ফলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন হুমকিতে পড়তে পারে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারাই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। বৃহস্পতিবার জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেল এখবর জানিয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট কমানোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে জাতিসংঘের পক্ষে মানবিক কর্মকা- চালিয়ে নেওয়া একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুশারি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান অবস্থা থেকে প্রস্তাবিত বাজেটের দিকে তাকালে এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, জাতিসংঘের পক্ষে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া, উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

জাতিসংঘের বার্ষিক বাজেটের সবচেয়ে বড় অংশ আসে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। জাতিসংঘের নিয়মিত বাজেট প্রায় সাড়ে পাঁচশ মার্কিন ডলারের পঁচিশ শতাংশ প্রদান করে দেশটি। এছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনের আলাদা বাজেটের (প্রায় ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার) আঠাশ দশমিক পাঁচ শতাংশও এতদিন যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে এসেছে।

কিন্তু অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অর্থ বছরের যে বাজেট পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র পেশ করেছে তাতে কূটনীতি ও ত্রাণ বাজেট প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার কমানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শান্তিরক্ষা মিশনের বর্তমান বাজেট থেকে প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমানো হবে। শুধু শান্তিরক্ষা মিশনই নয়, ইউনিসেফ এবং ইউএনএফপিএ’র বাজেট কমানোরও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বর্তমান বাজেট দিয়ে ১৬টি মিশন, একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র, লজিস্টিক ঘাঁটি এবং ১ লাখ ১৩ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েনের খরচ বহন করা হয়। এর মধ্যে কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান এবং সুদানের দারফুরে থাকা মিশনগুলোর প্রতিটিতে ১০০ কোটির বেশি মার্কিন ডলার করে খরচ হচ্ছে। এছাড়া শিগগিরই হাইতি, আইভরি কোস্ট এবং লাইবেরিয়াতে মিশন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মাঝেমাঝেই সমালোচনার মুখে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, হাইতিতে পরিচালিত মিশন সে দেশে ২০১০ সালের ভূমিকম্পের পর কলেরা ছড়িয়ে পড়া রোধে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া কিছু শান্তিরক্ষী ‘সেক্স রিং’ পরিচালনা করেছিল বলেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।-বাংলা ট্রিবিউন