বর্জ্য অপসারণে দ্রুতগতি, সন্তুষ্ট নগরবাসী

২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজধানীতে কোরবানির বেশির ভাগ বর্জ্য অপসারণ করেছে সিটি করপোরেশন। আজকের মধ্যেই বাকি বর্জ্য অপসারিত হয়ে যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বর্জ্য অপসারিত হওয়ায় সন্তুষ্ট রাজধানীবাসী।

দুই সিটি করপোরেশনে ঘুরে বিভিন্নজনের সঙ্গে আলাপকালে তাদের সন্তুষ্টির কথা জানা গেছে। সিটি করপোরেশনের কর্মীদের আন্তরিকতা, অনুকূল আবহাওয়া, পূর্বপ্রস্তুতি এবং নগরবাসীর সহায়তায় এবার বর্জ্য অপসারণ নিয়ে তেমন কোনো অভিযোগ নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঈদের প্রথম দিন বর্জ্য অপসারণ উদ্বোধনের সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছিলেন, নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বর্জ্য অপসারণকাজ শেষ করা যাবে।

বর্জ্য অপসারণে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নগরবাসীর মধ্যেও সহযোগিতার মনোভাব দেখা গেছে। নির্দিষ্ট স্থানে যারা পশু কোরবানি দিতে পারেননি তাদের বস্তায় ভরে বর্জ্য রাখতে দেখা গেছে। আর যারা তা রাখেননি তারাও এক জায়গায় স্তুপ করে বর্জ্য রেখেছেন। আর নিজেরাই ছিটিয়েছেন ব্লিচিং পাউডার।

মিরপুর কাঁঠালতলা এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী তারেক সিদ্দিক তার বাসার সামনে গরু কোরবানি দিয়েছেন। তিনি নিজের উদ্যোগেই সব বর্জ্য পরিষ্কার করে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় রেখেছেন। তারেক সিদ্দিক বলেন, ‘আসলে পরিবেশ দূষিত হলে আমাদেরইতো বেশি অসুবিধা হবে, তাই নিজেই এটা পরিষ্কার করলাম।’

তবে একই এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বস্তা ভরে ময়লা রেখেছি, কিন্তু এখনো সিটি করপোরেশনের কেউ এলো না। আমরা নিজেরাই যদি ময়লা ফেলে আসি তাহলে আমাদের ট্যাক্স দিয়ে লাভ কী। ময়লা থেকে দূর্গন্ধ বের হচ্ছে, জানি না কখন আসবে তারা।’

রাজধানীর ভূতের গলি মসজিদের সামনের বাসিন্দা রাশেদুল হল কোরবানি দিয়েছেন তার গ্যারেজে। গরু কাটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জায়গাটি ভালোভাবে ধুয়ে দিয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়েছেন। আর বর্জ্য বস্তায় ভরে বাসার সামনে রেখে দিয়েছেন স্তুপ করে।

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা শফিকুল আলম জানান, ডিএসসিসির ১৩০টি খোলা ট্রাক, ৩৭০টি কনটেইনার, ৮৫টি কনটেইনার মুভার, ৬৫টি ডাম্প ট্রাক, ১৫টি পেলোডার, ১০টি টায়ারলোডার, ৯টি স্কিড লোডার এবং ১২টি পানির গাড়ি নগরকে সাফ করার কাজে রয়েছে।

শাহবাগ থেকে কারওয়ানবাজার হয়ে মিরপুর রোড পর্যন্ত প্রধান সড়ক ঘুরে দেখা যায়, মাঝে মাঝে বর্জ্য থাকলেও তা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্তুপ করে রাখা।

হাতিরপুল এলাকার বিভিন্ন গলিতে দেখা যায়, ময়লা বস্তা ভরে রাখা। ইস্টার্ন প্লাজার পেছনের গলিতে ময়লার বস্তা সারিবদ্ধ করে রাখা। মিরপুর ১০ নম্বার দিয়ে মনিপুর স্কুলের দিকে যেতে বিভিন্ন জায়গায় ময়লা স্তুপ করে রাখা অবস্থায় দেখা যায়।

শেওড়াপাড়া ও কাজিপাড়া বাসস্টেশনের কাছে কোরবানির বর্জে্যর স্তুপ দেখা যায়।

ইস্কাটন সবজিবাগান জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় প্রায় ৪০টি গরু জবাই করা হলেও আজ সেখানে কোনো বর্জ্য দেখা যায়নি।

মধুবাগ, রামপুরা বাজার, ওয়াপদা রোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সে রাস্তাগুলো পরিষ্কার। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি রাজধানীর ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরেছি। আসলে এত তাড়াতাড়ি কোনো সময়ই দেখিনি বর্জ্য অপসারণ করতে।’ এর জন্য সিটি করপোরেশন ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করেন তিনি।