বাংলাদেশ সরকার বর্জন করায় লর্ড কারলাইলের হতাশা

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশ বিষয়ক একটি সেমিনার বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দল শেষ মুহূর্তে বর্জন করায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন আয়োজক লর্ড আলেকজান্ডার চার্লস কারলাইল।

বৃহস্পতিবার দেয়া এক বিবৃতিতে কারলাইল বলেন, কোনো উপযুক্ত কারণ ছাড়া সরকারের প্রতিনিধি দলের সেমিনারে অংশগ্রহণ প্রত্যাহার করা দুর্ভাগ্যজনক।

এদিকে সরকারের প্রতিনিধি দলের তরফে বলা হয় যে, সেমিনারের আয়োজন সম্পর্কে তাদের ভুল বোঝানো হয়েছে। তারা ভেবেছিলেন ব্রিটিশ সরকার কিংবা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এ সেমিনারের আয়োজক। কিন্তু এটি যে ব্যক্তিগত আয়োজনে হচ্ছে এবং জামায়াতের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছে সেটি তাদের জানা ছিল না।

মঙ্গলবারের ওই সংলাপ অনুষ্ঠানের আগে কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ওয়েস্টমিনিস্টার পার্ক প্লাজা হোটেলে অতিথিদের সম্মানে প্রথা অনুযায়ী ভোজসভার আয়োজন করে। সরকারের প্রতিনিধিরা বিএনপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এতে অংশ নেন। এর ঠিক দুই ঘণ্টা পর পার্লামেন্টের আর্চবিশপ কক্ষে শুরু হওয়া নির্ধারিত সেমিনারে সরকারের প্রতিনিধিরা যোগ দেননি।

সেমিনারে অংশ নিতে সরকারের পক্ষ থেকে লন্ডন যান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদষ্টো ড. গওহর রিজভি, অর্থনীতি বিষয়ক উপদষ্টো ড. মসিউর রহমান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা। আলোচনা শুরুর পর খবর আসে যে, সরকারের প্রতিনিধিরা সেমিনার বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গওহর রিজভি, মসিউর রহমান ও দীপু মনি পরে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি যে ব্যক্তিগত আয়োজন সেটি তাদের জানানো হয়নি। তারা ভেবেছিলেন এটি ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কিংবা ব্রিটিশ সরকারের আয়োজনে হচ্ছে। তাছাড়া এ সেমিনারে জামায়াতের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এ কথাও তাদের জানা ছিল না। এ কারণে এই সেমিনার বর্জন করেছেন তারা।

এ ব্যাপারে লর্ড কারলাইল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, Èসেমিনারটি যে ব্যক্তিগত আয়োজনে হচ্ছে সেটি জানতেন না বলে দেয়া বক্তব্যে আমি হতাশ হয়েছি। গত ১২ জুলাই সেমিনারের বক্তাদের কাছে আমি একটি বিবৃতি পাঠাই। সেটি দেখার পর বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দল সেমিনারে অংশ নেয়ার বিষয় নিশ্চিত করে।’

কারলাইলের বিবৃতিতে বলা হয়, Èসেমিনারটি কোনো অফিসিয়াল কিংবা পাবলিক ইভেন্ট নয়। এটি ব্যক্তিগতভাবে আয়োজিত রুদ্ধদ্বার ইভেন্ট। সেখানে আমি অংশগ্রহণকারীদের সংক্ষপ্তি বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দিয়েছি। এতে ফোকাস করার কথা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর। আমার সভাপতিত্বে পরে উন্মুক্ত আলোচনার সুযোগ রাখা হবে।’

কারলাইল আরও বলেন, Èগণতন্ত্র ও আইনের শাসন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত আগ্রহের বিষয়। আমরা আশা করেছিলাম, বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে তাদের গঠনমূলক মতামত দেবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার কোনো উপযুক্ত কারণ ছাড়াই সেমিনার থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।’

লর্ড কারলাইল উল্লেখ করেন যে, তিনি ও অ্যান মেইন এমপি গত বছর একইভাবে সেমিনার আয়োজন করেছিলেন। সেখানে সরকার তথা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।