‘বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেন? বাবা কি দুষ্টু?’

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতার মামলা ও তার বিপরীতে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয় বরিশালের আগৈলঝড়ার সাবেক (বর্তমানে বরগুনা সদর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তারিক সালমনকে। পরে অবশ্য এর দুই ঘণ্টা পর তার জামিন মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে জল গড়িয়েছে অনেক দূর।

বরগুনা সদরের এই ইউএনওকে হাতকড়া পরিয়ে জেলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়েছেন বাংলাদেশের অনেক মানুষ। যে ধরনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছিল, সেরকম একটি মামলা যে করা যায়, আর সেই মামলায় একজন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাকে এভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া যায়, তা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে।

এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কর্মকর্তারাও এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও।

পরে অবশ্য তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মামলা করা বরিশাল আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদউল্লাহ সাজুকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। সর্বশেষ গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আলোচিত ওই মামলা প্রত্যাহার করেন অ্যাড. ওবায়েদ উল্লাহ সাজু।

এতকিছুর পরও তারিক সালমন অনেকটা নীরব থাকলেও আজ সকালে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। পাঠকের সুবিধার্থে স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো…

‘যে প্রশ্নের উত্তর পায়নি ঈশান

ওর নাম রেখেছি ‘তরুণ ঈশান’। নজরুলের কবিতা থেকে। আমার একমাত্র সন্তান। বয়স পাঁচ ছুঁই-ছুঁই। সে একটা প্রশ্ন করেছে তার মাকে। সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো পায়নি সে। টিভিপর্দায় সে দেখেছে যে তার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সে জানে, পুলিশ দুষ্টু লোকদেরই ধরে শুধু (কারণ সে মাঝেমধ্যে ‘ক্রাইম পেট্রল’ দেখে সনি আট চ্যানেলে)।

ঈশান জিজ্ঞাসা করেছে তার মাকে, “আমার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেন? বাবা কি দুষ্টু?”। তনু, আমার স্ত্রী, এই প্রশ্নটির জবাব দিতে পারেনি তার ছেলেকে এখনো।

এই প্রশ্নের উত্তরটি আমরা খুঁজছি।’