বাড়তি ভাড়া-সিডিউল বিপর্যয় রোধে কঠোর মনিটরিং : মেনন

হজযাত্রীদের বিমানের টিকিটে বাড়তি ভাড়া আদায় ও সিডিউল বিপর্যয় এড়াতে এবার কঠোর মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

টিকিটে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

সোমবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম হজ ফ্লাইট উদ্বোধন শেষে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন (বিএইচ হারুন) উপস্থিত ছিলেন।

প্রতি বছরই হজ ফ্লাইটে সিডিউল বিপর্যয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়, এবার কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের এবার সতর্কতা আছে। তবে প্রতিবার যেটা হয়, তা হলো ফিরতি যাত্রায় সমস্যা। সৌদি বিমানবন্দরের টার্মিনালে ট্রেনগুলোতে হজযাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, তারা গেট পান না।

তিনি আরও বলেন, বিমানের জট লেগে যায়। আমরা চেষ্টা করছি এবার যেন সে ধরনের কোনো সমস্যা না হয়। লিংক ডিউরেশনও যেন কমিয়ে আনা যায়, সে চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা ও আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে এবারের হজযাত্রার প্রথম ফ্লাইট যাচ্ছে। বাংলাদেশ বিমানের কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সময় মতো ছেড়ে যাচ্ছে। এ জন্য শুকরিয়া।

তিনি বলেন, আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পূর্ণ হজ ফ্লাইট শেষ হবে। ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর, শেষ হবে ৫ অক্টোবর। আজ ৪১৮ জন যাত্রী নিয়ে হজ ফ্লাইট যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে পূর্ণ যাত্রী নিয়ে সৌদি ও বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রা করবে এবং ফিরে আসবে।

এবার হজযাত্রায় কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না। সে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইটে অনিয়মিত ১৪৪টি এবং নিয়মিত হজ ফ্লাইট ৩৩। হজ পরবর্তী মোট ১৬৮টি ফ্লাইট চলবে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এর মধ্যে অনিয়মিত ১৩৯ এবং নিয়মিত ২৯।

এবারের মোট হজযাত্রী ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। হজ ফ্লাইট ও সিডিউল ফ্লাইটে ব্যালটি ৪ হাজার ৯০ জন। নন ব্যালটি ৫৯ হাজার ৫শ ১০ জন। ফলে নির্বিঘ্নে হজযাত্রা সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, আশা করছি আল্লাহর রহমতে নিয়মিত ফ্লাইট যথা সময়ে ছেড়ে যাবে। সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা করে হজযাত্রীদের বিদায় জানানো হয়েছে।

এদিকে, হজযাত্রীদের টিকিট বিশেষ করে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ ওঠেছে। ২/৩টি এজেন্টের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করছে সৌদি এয়ারলাইন্স। এটা বন্ধে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী রাশেদ খান বলেন, আমরা এটা সৌদি এয়ার কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করেছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাদের টিকিটিং পলিসি আছে। সারা বছর যারা তাদের টিকেট বিক্রি করে তারাই হজযাত্রীদের টিকিট বিক্রি করছে। নির্ধারিত এজেন্সিই টিকিট বিক্রি করছে।

তবে বিমানের টিকিট বাবদ অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ মন্ত্রণালয় পায়নি বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের বিমান কর্তৃপক্ষকে জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের মনিটরিং আছে। বিমানের যাত্রীদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ করেননি।

বিমান বাংলাদেশের কিছু মধ্যবর্তী কর্মচারীদের যোগসাজশে মতিঝিল অফিসকেন্দ্রিক টিকিট সিন্ডিকেট সক্রিয়। এটা প্রতিরোধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের টাস্কফোর্স কাজ করছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা।

বিনা টেন্ডারে ২৭ কোটি টাকার ট্রলিব্যাগের একটি টেন্ডার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ বিষয়ে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, যদি কোনো অভিযোগ আসে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি একটা প্ল্যান দিয়েছি। সে অনুযায়ী কোয়ালিটি মেইনটেইন করা হবে। এমপি হারুন সাহেব বিষয়টি দেখভাল করছেন।