বিএনপির কারণেই এস কে সিনহার দুর্দশা : তোফায়েল

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপির কারণেই প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার দুর্দশা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকার কাশর এলাকায় একটি পোশাক কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ নিয়েও কথা বলেন।

তোফায়েল আরো বলেন, এস কে সিনহা যখন ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে পর্যবেক্ষণ দিলেন, তখন বিএনপি খুশি হয়ে মিষ্টিমুখ করল। তখন আওয়ামী লীগ চুপ ছিল। প্রধান বিচারপতি বিদেশ যাওয়ার আগে আবার বলে গেলেন তিনি সুস্থ রয়েছেন।

ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. এম আমান উল্লাহ, ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম মোস্তফা, পোশাক কারখানা অ্যাডামস স্টাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হামিদুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শহিদুল ইসলাম মুকুল, পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, রিদিশা টেক্সটাইলের এমডি রেজাউল করিম, ভালুকা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন আজমেদ ধনু, মোর্শেদ আলম, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিরা সুলতানা মনি, হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহম্মেদ বাচ্চু।

বাণিজ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। স্থানীয় প্রশাসন, রাজনীতিবিদরা তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে তিনি অ্যাডামস স্টাইল লিমিটেডের শুভ উদ্বোধন করেন।

গত ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় যান সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা। যাওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।’ যদিও এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।

এস কে সিনহার বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন, অর্থপাচারসহ ১১টি অভিযোগ পাওয়ার কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছাড়া আপিল বিভাগের অন্য পাঁচ বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাসভবন বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান। বিচারপতি ইমান আলী বিদেশে থাকায় অন্য চার বিচারপতি বঙ্গভবনে যান। তাঁরা হলেন বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। সাক্ষাৎকালে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনসহ ১১টি অভিযোগের দালিলিক তথ্যাদি চার বিচারপতির কাছে হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রপতি।

গত ১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৭৯৯ পৃষ্ঠার ওই রায় প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত রায় অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত করা হয়।