বিএনপির বলিষ্ঠ নেতাদের বেছে বেছে হত্যা চলছে : খালেদা

বর্তমান সরকার বিএনপির বলিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যা করার মিশন নিয়ে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা কব্জায় রাখাই আওয়ামী রাজনীতির সংস্কৃতি। এজন্য সরকার বিএনপির বলিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যার মিশন নিয়ে কাজ করছে।’

গতরাতে নিজ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন খুলনা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফুলতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দিন মিঠু। এর প্রতিবাদে সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন এই মন্তব্য করেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা কব্জায় রাখার সংস্কৃতির অংশ হিসেবে সরকার বিএনপি’র বলিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বেছে বেছে হত্যার মিশনে নেমেছে। আর সেই মিশনেরই নিষ্ঠুর শিকার হলেন সরদার আলাউদ্দিন মিঠু।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যার মাধ্যমে রক্তে হাত রঞ্জিত করে বাংলাদেশকে গোরস্থানে পরিণত করা হয়েছে। শহর, গ্রামসহ জনপদের পর জনপদে মানুষ হত্যার মহাযজ্ঞ যেন থামছেই না। সন্তানহারা পিতা-মাতা, স্বামীহারা স্ত্রী ও পিতাহারা সন্তানদের আহাজারিতে প্রতিদিনই দেশের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।’

রাতের আঁধারে মিঠুকে হত্যার ঘটনাতে কাপুরুষোচিত উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিঠুকে নির্মমভাবে হত্যা সরকারের ধারাবাহিক প্রাণঘাতি নৃশংসতার আরেকটি বহি:প্রকাশ। দেশকে গণতন্ত্রশুন্য করতেই আওয়ামী লীগ গণসম্মতি উপেক্ষা করে চরম সীমালঙ্ঘন করছে। আর সীমালঙ্ঘনের কারণে ঝরে যাচ্ছে বিরোধীদলের অনেক প্রতিবাদী নেতাকর্মীর প্রাণ। সরকারের বিরুদ্ধে কেউ যেন কথা বলার সাহস না পায় এবং সমাজে যেত আতঙ্ক বিরাজ করে সেজন্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতার মোহে অন্ধ, বেপরোয়া ও মানবিকবোধশুন্য হয়ে পড়েছে। দুর্বিনীত অনাচার ও প্রতিদিন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে দেশকে এক মহাদুর্যোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এ কারণে বিএনপিকে কোনো সমাবেশ বা কোন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, রক্তপাত ঘটিয়ে জীবন কেড়ে নিয়ে ভীতির সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। জনগণ আর বসে থাকবে না। দু:শাসন মোকাবেলায় অব্যাহত রক্তপাতের কর্মসূচিকে সম্মিলিত শক্তি দিয়ে জনগণ প্রতিহত করবে।

বিবৃতিতে খালেদা জিয়া মিঠুর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকার্ত পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আলাদা আরেকটি বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মিঠু বিএনপি’র বলিষ্ঠ নেতা হওয়ায় তাকে প্রতিহিংসাবশত পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের মদদেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।’ তিনি এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।