বিদায় লগ্নে মোদীকে ‘বার্তা’ দিয়ে গেলেন প্রণব!

বিদায় লগ্নে ইন্দিরা গান্ধীর দৃষ্টান্ত তুলে নরেন্দ্র মোদীকে বার্তা দিয়ে গেলেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। আর দু’দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেবেন প্রণব। তার আগে সোমবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে ছিল এমপিদের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা। সেখানে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর আবেগ, উদ্যম, সৌজন্য এবং উষ্ণতার প্রশংসা করার পাশাপাশিই মোদী জমানায় যেভাবে কোনও আলোচনা ছাড়াই বিল পাশ করানো বা সংসদকে এড়িয়ে অধ্যাদেশ আনা হয়, তারও সমালোচনা করলেন তিনি।

এছাড়াও ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে মোদীকে গণতন্ত্রের বার্তাও দিলেন সুকৌশলে।

রাষ্ট্রপতি জানান, তার ‘মেন্টর’ ছিলেন ইন্দিরা। সত্য বলতে কখনও দ্বিধা করতেন না। জরুরি অবস্থার জেরে কংগ্রেসের হারের পরে লন্ডনে সাংবাদিকেরা ইন্দিরাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘জরুরি অবস্থা থেকে লাভ কী হল?’ ইন্দিরার জবাব ছিল, ‘এই ২১ মাসে ভারতের সব অংশের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পেরেছি।’ জবাব শুনে প্রথমে নীরবতা, তার পর অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন সকলে। কেউ আর কোনও প্রশ্ন করেননি।

ওই দৃষ্টান্ত দিয়েই প্রণব মুখার্জি বলেন, ‘তখনই আমি শিখেছিলাম, নিজের ভুল স্বীকার করে তা শুধরে নিতে। অজুহাত দেওয়ার থেকে নিজেকে শুধরে নেওয়া সব সময় ভাল।’

বিদায়বেলায় প্রণবের এসব খোঁচা মোদীর উদ্দেশেই বলে ধারণা অনেক এমপির। কারণ, এর ঠিক আগেই উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি প্রণবকেই উদ্ধৃত করে বলেছেন ‘অসহিষ্ণু’ ভারতের কথা। ক’দিন আগেও তিনি প্রণবকেই উদ্ধৃত করে রাজ্যপাল প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে কেন্দ্রের সমালোচনা করেছিলেন।

বিভিন্ন সামাজিক আইন রূপায়ণের জন্য সনিয়া গান্ধীর প্রশংসা করার পাশাপাশি প্রণব এ দিন বাজপেয়ী, আদভানি, বাম নেতাদের কথাও উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গেই জানান, একমাত্র বাধ্য না হলে আর্থিক বিষয়েও অধ্যাদেশ আনা উচিত নয়। আইন তৈরির জন্য যেভাবে সময় কমছে, তা ‘দুর্ভাগ্যজনক’। আলোচনা ছাড়াই আইন হচ্ছে। এতে মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করা হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা