বিমানের শৌচাগারে ‘বাঁচাও’ লেখা নোট পেলেন বিমানসেবিকা, অতঃপর…

ফ্লাইট অ্যাটেন্ড করা তার কাজ। কোথাও কোনও যাত্রীর কোনওরকম অসুবিধা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকেন আলাস্কান এয়ারলাইনসের কর্মী শীলা ফ্রেডরিক। সেদিনও সান ফ্রান্সিসকো যাওয়ার বিমানে তাই করছিলেন শীলা।

হটাৎ করেই তার নজর যায় বিমানের সিটে বসে থাকা এক ১৪-১৫ বছরের মেয়ের উপর। এক ধোপদুরস্ত পোশাক পরা ব্যক্তির পাশে বসে রয়েছে মেয়েটি। কিন্তু তার পোশাক যথেষ্ট অপরিচ্ছন্ন। তা থাকতেই পারে। কিন্তু মেয়েটির চোখের চাহনি বড় অদ্ভুত ছিল। যেন কিছু একটা বলতে চাইছিল শীলাকে। কিন্তু পাশের লোকটার জন্য বলে উঠতে পারছে না।

এমন সময় বিদ্যুতের মতো একটি উপায় মাথায় আসে শীলার। মেয়েটির পাশ দিয়ে বিমানের টয়লেটের দিকে যান শীলা। সেখানে একটি নোটপ্যাড ও পেন রেখে আসেন। টয়লেট থেকে বেরিয়েই মেয়েটিকে সেখানে যেতে ইশারা করে দেন। তার ফিরে আসার কিছুক্ষণ পর মেয়েটি টয়লেটে প্রবেশ করে। সে ফিরে আসার পর আবার বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন শীলা। খানিকটা সময় কাটিয়েই টয়লেটে ফিরে যান তিনি। নোটপ্যাড খুলে দেখেন তাতে লেখা ‘বাঁচাও আমায়’।

আর সময় নষ্ট করেননি এই বিমানসেবিকা। সঙ্গে সঙ্গে পাইলটকে গিয়ে সমস্ত কথা জানান। তিনি আগে থেকেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাখেন। সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে নামা মাত্র উদ্ধার করা হয় মেয়েটিকে। গ্রেফতার করা হয় তার পাশের ব্যক্তিকে।

জানা যায়, বড় মাপের শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত ওই ব্যক্তি। যা ফাস হল শীলার মতো বিমানসেবিকার সতর্কতায়। এর কিছুদিন পরই শীলার কাছে একটি ফোন আসে। তা ছিল উদ্ধার হওয়া মেয়েটির। নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য শীলাকে ধন্যবাদ দেয় সে।

এই ঘটনা ২০১১ সালের, কিন্তু আজও মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে শীলার। আর এখন শীলা শিশুপাচারের মতো ঘটনা নিয়ে আরও সতর্ক। এয়ারলাইন অ্যাম্বাসাডরস ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি সংগঠনের সদস্য তিনি। যেখানে এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বিমানসেবিকাদের।