বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে চুরি করেন তিনি!

পরনে ব্র্যান্ডের পোশাক, হাতে দামি মোবাইল। চাল-চলনও চলচ্চিত্র জগতের কোনো নায়কের চেয়ে এক বিন্দুও কম নয়। চুরি করতে যেতেন বিলাসবহুল সেডান গাড়িতে চেপে। এমনই এক ‘সুপার’ সিঁধেল চোরকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নাম সিদ্ধার্থ মেহরোত্র। ২৭ বছরের সিদ্ধার্থ এক সাবেক ব্যাংককর্মীর ছেলে। দক্ষিণ দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকায় গত ১০ মাস ধরে শুধুমাত্র মন্ত্রী, আমলা এবং রাজনীতিকদের ঘরেই সিঁধ কাটছিলেন তিনি। গত ১৫ অাগস্ট দিল্লির পিতমপুরা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার করা হয়েছে তার দুই সহযোগীকেও। জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছেন তারা। সিদ্ধার্থ পুলিশকে জানান, ‘বেছে বেছে শুধুমাত্র মন্ত্রী, আমলা এবং রাজনীতিকদেরই ঘরেই সিঁধ কাটতাম।’

তার চুরি করার পদ্ধতি একেবারেই আলাদা। দিল্লি পুলিশ বলছে, অনেক ভেবে অভিজাত বসন্তকুঞ্জ এলাকাকে বেছে নিয়েছিল সিদ্ধার্থ। তার চালচলন চোরের মতো ছিল না। বিলাসবহুল সেডান গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। পরেন দামি ব্র্যান্ডের জামা-কাপড়। তাকে দেখে কারো মনে সন্দেহ জাগেনি। যে বাড়িতে আলো জ্বলত না সেসব বাড়িই নিশানা করতেন তারা।

প্রথমে কলিং বেল বাজাতেন। বাড়ির কেউ দরজা খুলতে এলে, ভুল ঠিকানায় এসে পড়েছেন বলে বাহানা দেখিয়ে সরে পড়তেন। কিন্তু একাধিকবার বেল বাজানোর পরও কেউ বেরিয়ে না এলে বাড়িতে কেউ নেই বলে বুঝতেন তারা। তখনই শুরু হতো অপারেশন। আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে জানালা কিংবা গ্রিল কেটে চুপিসারে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়তেন। লুটিয়ে নিতেন টাকা-পয়সা, অলঙ্কার।

এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রথমে সিদ্ধার্থ মেহরোত্রার চুরির হদিস পায় পুলিশ। তবে তার নাগাল পেতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়। এর আগে, ২০১৫ সালে নয়ডা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মাধ্যমে সেই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য হাতে পায় পুলিশ।

পরে সিদ্ধার্থের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের হদিস মেলে। ১৫ আগস্ট পিতমপুরার একটি রিসোর্টে ছুটি কাটাচ্ছিলেন তিনি। ফাঁদ পেতে সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয়েছে ১১টি সোনার চেন, ৪টি আংটি, ৮ জোড়া কানের দুল, ২টি বালা, ২০০ মার্কিন ডলার, ইন্দোনেশিয়ার এক লাখ রূপি, নেপালের ২০ টাকা, একটি ৪২ ইঞ্চির স্যামসাং এলইডি টেলিভিশন, সোনি প্লে-স্টেশন, ভিআর প্লেয়ার, একটি ল্যাপটপ এবং একটি টিসট ঘড়ি। আনন্দবাজার।